বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > ‘পর্দায় হিন্দু সন্ন্যাসীদের ধর্ষক হিসাবেও তুলে ধরা হয়, তার বেলা?’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মুক্তি আটকালো না হাইকোর্ট

‘পর্দায় হিন্দু সন্ন্যাসীদের ধর্ষক হিসাবেও তুলে ধরা হয়, তার বেলা?’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মুক্তি আটকালো না হাইকোর্ট

মুক্তি পেল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’

The Kerala Story Row: বিতর্কের বেড়াজাল পেরিয়ে মুক্তি পেল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। ছবির সেন্সর সার্টিফিকেট বাতিলের আবেদন খারিজ কেরল হাইকোর্ট। ছবির মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা নয়, জানাল কোর্ট। 

বিতর্কের বেড়াজল টপকে অবশেষে মুক্তি পেল চলতি বছরের সবচেয়ে বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের এই ছবি ঘিরে চর্চা সবমহলে। মুক্তির পরেও ছবি ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হচ্ছে একাধিক রাজ্যে। বাম শাসিত কেরলের পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। রাতারাতি এই ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দুটি হল থেকে। কোচির মাত্র তিনটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে কেরলের কাহিনি! 

কংগ্রেস, বাম-সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের অভিযোগ এই ছবিটি ‘প্রোপাগান্ডা ফিল্ম'। এর মধ্যমে ‘ইসলামোফোবিয়া’ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটির মুক্তি জাতীয় সংহতি ক্ষুণ্ন করবে। তবে সুপ্রিম কোর্ট, মাদ্রাজ হাই কোর্টের পর কেরল হাই কোর্টও এই ছবির মুক্তির উপর কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করতে অস্বীকার করল। ছবির সেন্সর সার্টিফিকেট বাতিলের প্রশ্নই নেই জানায় আদালত।

ছবির মুক্তি আটকাতে কেরল হাই কোর্টে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছিল। শুনানির সময় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র ট্রেলার দেখেন বিচারপতি এন নাগারেশ এবং বিচারপতি সোফি থমাসের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য অবমানাকর কোনওকিছুই ছবির ট্রেলারে অন্তত উঠে আসেনি। আল্লাহই একমাত্র উপাস্য় এমনটা তুলে ধরা অপরাধ নয়। এই দেশে প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম মেনে চলা এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার অধিকার রয়েছে। সেটা আপত্তিজনক কেন? আদালত আরও জানায়, ‘অসংখ্য় ছবিতে তো হিন্দু সন্ন্যাসীদের ধর্ষক হিসাবে তুলে ধরা হয়, তার বেলায়? হঠাৎ করে এখন এত প্রশঅন কেন?’

শুনানি চলাকালীন বিচারপতি নাগারেশ জানান, ‘দেশে বাক স্বাধীনতা বলে একটা বস্তু রয়েছে। শিল্পীর বাক স্বাধীনতা রয়েছে, আমাদের সেটা মাথায় রাখতে হবে’। পাশাপাশি আদালতের সাফ কথায়, এই ছবিতে ইসলাম বিরোধী কিছু দেখানো হয়নি, বরং আইসিস নামের এক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। 

আবেদনকারীর বক্তব্য ছিল, কোনওরকম তদন্তকারী সংস্থা আজ পর্যন্ত কেরলে ‘লাভ জিহাদ’-এর অস্তিতের কথা জানায়নি। তাই সাধারণ মানুষের মন কলুষিত করতে পারে এই ছবি, এমনই আশঙ্কা। 

আদলত জানায়, এই ছবিতে বলা হয়েছে এটি সত্য ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত মাত্র, এছাড়াও প্রযোজকরা ছবির শুরুতে যোগ করেছেন, এটি ঘটনার নাট্যরূপান্তর। এছাড়াও আদালত জানতে চায়, আবেদনকারী কি এই ছবি দেখেছে? নেতিবাচক জবাবে হয়রান কোর্ট। তাঁদের স্পষ্ট কথা সেন্সর বোর্ড এই ছবিকে জনসমক্ষে প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েছে। তাই ছবি না দেখে সেটি নিয়ে আপত্তি জানানো অযাচিত। 

অন্যদিকে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র প্রযোজক ও সৃজনশীল পরিচালক বিপুল অমৃত শাহ আদালতকে জানিয়েছেন ছবির যে টিজারে উল্লেখ ছিল দক্ষিণ ভারতের রাজ্য (কেরল) থেকে ৩২,০০০ মহিলা গায়েব হয়েছেন, এবং আইসিসে যোগ দিয়েছেন তা সরিয়ে ফেলা হবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। ১০টি দৃশ্যে কাঁচি চালানোর পর এই ছবিকে মুক্তির ছাড়পত্র দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। 

পুল শাহ প্রযোজিত এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন আদা শর্মা, যোগিতা বিহানি, সোনিয়া বালানি এবং সিদ্ধি আদানি। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পর বিতর্ককে ভর করে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ও কি বক্স অফিসে চমক দেখাবে? সেটাই এখন প্রশ্ন। 

 

বন্ধ করুন