জিভ আছে বলেই খাদ্যরসিকের অস্তিত্ব। খাবারের স্বাদ বোঝার কাজে যে অঙ্গ একমাত্র সাহায্য করে, তা হল জিভ। এই জিভেই যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তবে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু খাবারের স্বাদ বুঝতেই জিভের প্রয়োজন তেমন নয়। শরীরে কোনও রোগ বাসা বাঁধলে তার কিছু উপসর্গ জিভেও ফুটে ওঠে। তাই চিকিৎসকেরা কিছু নির্দিষ্ট রোগের লক্ষণ বোঝার জন্য প্রথমেই জিভের পরীক্ষা করে থাকেন। এছাড়াও খাবার চিবোতে ও গিলতে সাহায্য করে এই অঙ্গ। খাওয়াদাওয়া ও রোগ নির্ণয়ের পর যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ জিভ করে, তা হল কথা বলা। কথা বলতে আমাদের বিভিন্ন স্বর উচ্চারণ করতে হয়। এই স্বরগুলো জিভ, টাকরা ও ঠোঁট ছাড়া উচ্চারণ করা সম্ভব নয়। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের পিছনে ভূমিকা থাকায় জিভে কোনও সমস্যা হলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
খাদ্যনালির একদম শুরুতে থাকায় এই অঙ্গে নানারকম রোগ দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন রোগের মধ্যে অন্যতম একটি হল জিভের উপরের ভাগ কালো হয়ে যাওয়া। নিয়মিত যত্ন না নিলে খাবারের কণা জমে জিভে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উদ্ভব হয়। এই ব্যাকটেরিয়া জিভের বিভিন্ন অংশে গুরুতর সংক্রমণ ঘটাতে পারে। জিভের কালো দাগ প্রধানত এই কারণেই দেখা দেয়। এছাড়া, কোনও কারণে মৃত কোষ জিভের উপরিভাগে জমলেও এমন দাগ দেখা দিতে পারে।
এই দাগ দূর করতে সবসময় চিকিৎসকের সাহায্যের প্রয়োজন হয় তা নয়। বরং ঘরেই কিছু নিয়ম মেনে চললে সহজে এই দাগ দূর হতে পারে।
১. আনারস: আনারসের মধ্যে থাকে ব্রোমোলিন। এটি জিভের মৃত কোযগুলো দূর করে। ফলে জিভের কালো দাগও দূর হয়।
২. অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার: অ্যালোভেরা ত্বক ও চুলের পাশাপাশি জিভের জন্যও উপকারী। এটির কোলাজেন কাঠামো জিভের কালো দাগ তুলতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরার জেল লাগানোর পাশাপাশি এর জুসও খাওয়া যেতে পারে।
৩. নিমপাতার ব্যবহার:ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকরী ভূমিকা নেয় নিমপাতা। নিমপাতা এক গ্লাস জলে ভালো করে ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে জিভ ধুয়ে নিতে হবে। রোজ দুবার এটি করলে খুব তাড়াতাড়ি দাগ উধাও হবে।
৪. লবঙ্গ ও দারচিনি ব্যবহার: পাঁচটি লবঙ্গ ও দারচিনির দু-তিনটে টুকরো একসঙ্গে এক গ্লাস জলে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণ দিয়ে দিনে দু’বার কুলকুচি করতে হবে। নিয়মিত কুলকুচি করলে অল্প দিনেই এই দাগ চলে যাবে।