বাংলা নিউজ >
টুকিটাকি > Janmashtami 2023: ১৩৮ বছর ধরে জন্মাষ্টমী উদযাপন! সোদপুরে পাইনদের পুজো নাকি শুরু গোপালের আবদারে
Janmashtami 2023: ১৩৮ বছর ধরে জন্মাষ্টমী উদযাপন! সোদপুরে পাইনদের পুজো নাকি শুরু গোপালের আবদারে Updated: 07 Sep 2023, 07:44 PM IST Sanket Dhar Janmashtami 2023: ১৩৮ বছর ধরে জন্মাষ্টমী উদযাপন হচ্ছে পাইনদের বাড়িতে। গোটা সোদপুরেই পরিচিত এই বাড়ি। কাঠিয়া বাবার আশ্রমের ঠিক বিপরীতেই দাঁড়িয়ে এই বিশাল মন্দির। 1/14 দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ১৩৮ বছর। ১২৯৩ বঙ্গাব্দে জন্মাষ্টমীর সূচনা হয় সোদপুরের বিহারীলাল পাইনের বাড়িতে। ১৩৮ বছর পার হলেও এই পুজোর উদযাপন আজও দায়িত্ব নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। 2/14 এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। ব্রিটিশ আমলে কলুটোলার বাসিন্দা বিহারীলাল পাইনের রঙিন কাঁচের ব্যবসা ছিল। ওই সূত্রেই বিহারীলালের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। 3/14 লক্ষ্মীর আশীর্বাদে ভরে ওঠে তাঁর সংসার। সে সময়ই হঠাৎ এক রাতে স্বপ্নাদেশে এলেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। মন্দির গড়ার নির্দেশ এল বিহারীলালের কাছে। 4/14 কিন্তু কোথায়? সে নির্দেশও দিলেন মাধব। ঈশ্বর নির্দেশিত সেই স্থানে গিয়ে দেখা যায় একটা শশ্মান! শশ্মানে মা কালীর মন্দির সম্ভব, কিন্তু গোপালের? তখনই এক বিশেষ উপায় বেরিয়ে এল। 5/14 বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী বিহারীলাল শশ্মানের পাশে এক জমি কিনে নেন। সেই জমিতে গোটা পারলৌকিক প্রক্রিয়া স্থানান্তরিত করা হয়। ফাঁকা হয়ে যায় শশ্মানের জমি। এর পর সে জমিতেই শুরু হয় মন্দির গড়ার প্রক্রিয়া। গঙ্গার ঘাটে খোলা হাওয়ায় বসে পাইন বাড়ির এই ইতিহাস শোনাচ্ছিলেন চতুর্থ প্রজন্মের পঞ্চাশোর্ধ্ব আপন পাইন। 6/14 ১৮৮৫ সাল থেকে রাধামাধব পূজিত হচ্ছেন পাইনদের বাড়িতে। শুধু জন্মাষ্টমী নয়, রাসযাত্রাও হইহই করে উদযাপিত হয় পাইনদের নাটমঞ্চে। মূল ঠাকুরদালানের দক্ষিণদিকে রাসমঞ্চ। 7/14 ব্রিটিশ আমল থেকেই রাসমঞ্চের সামনে খোলা স্থানে যাত্রাপালা হত। গোটা এলাকার ভিড় জড়ো হত পাইন বাড়িতেই। এখনও রাসের দিন ৩০০-৪০০ লোকের পাত পড়ে সেখানে। 8/14 রাসমঞ্চের ঠিক উল্টোদিকে রয়েছে একটি বিশাল বট গাছ। মন্দিরের থেকেও বেশি পুরনো সেটি। কী কী ভোগ হয় জন্মাষ্টমীতে? আপন পাইনের কথায়, ‘নিত্য ভোগের মধ্যে থাকে চার পাঁচ রকমের খাবার, চাটনি, পায়েস। শ্রীকৃষ্ণের পূজারীদের হাতেই সব দায়িত্ব।একটা রান্নাঘর, একটা ভাঁড়ারঘর রয়েছে মন্দির লাগোয়া। সেখানেই কোনও বিশেষ পুজো থাকলে এলাহি ভোগের আয়োজন হয়। 9/14 রাধামাধবের দৃষ্টিনন্দন বিগ্রহ তৈরি নিয়েও ছিল ঈশ্বরের স্বপ্নাদেশ। আপন পাইন বলেন, ‘বিহারীলাল স্বপ্নাদেশ পান, বিগ্রহ তৈরি করতে হবে বাঁকুড়ার শিল্পীকে দিয়ে। তখন বাঁকুড়ায় মূর্তিশিল্পের রমরমা। সেখান থেকেই শিল্পী আনিয়ে তৈরি করা হয় বিগ্রহ। যে বিগ্রহে প্রতি বছর অঙ্গরাগ পরান পূজারীরা।’ 10/14 কথায় কথায় উঠেছিল মন্দির নির্মাণের কথা। ১৮৮৫ সাল নাগাদ যখন মন্দির নির্মাণ শুরু হয়, তখন কলকাতায় ইঁটের আকাল। মন্দিরের কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে রয়েছে। ভরসা দিতে পারছে না পরিচিত ইঁটভাটা। চিন্তায় বিহারীলাল। 11/14 এমন সময় এক ভ্যান ইঁট ঠাকুরদালানে ঢোকে পিছনের ফটক দিয়ে। কে পাঠাল? ভ্যানওয়ালা জানাল এক নাম। কিন্তু সে নামের কাউকে খুঁজেই পাওয়া গেল না গোটা এলাকা। ‘ঈশ্বরের কৃপা ছাড়া এ আর কী হতে পারে?’ বলতে বলতে চোখ বোজেন আপন পাইন। 12/14 জন্মাষ্টমীর পরের দিনই নন্দোৎসব। সে দিনও আয়োজনের ঘাটতি নেই। এলাকার অনেকেরই নিমন্ত্রণ থাকে এই দিন। তাছাড়াও অনেকেই আসেন ঈশ্বর দর্শনে। উদযাপনের অংশ হতে। আমন্ত্রিত অনামন্ত্রিত সবার জন্যই অবারিত দ্বার। 13/14 বিহারীলাল পাইন তাঁর আমলেই গঙ্গার ধারেই তৈরি করেছিলেন একটি ব্যক্তিগত ঘাট। কলকাতায় গঙ্গার সব ঘাটই পৌরসভার অধীনে। সেই হিসেবে ব্যক্তিগত ঘাট বিরল বললেই চলে। পঞ্চাননতলা ঘাটের দক্ষিণে পাইনদের ব্যক্তিগত জমিতেই সেই ঘাট। গঙ্গার তোড়ে ঘাটের দশা শোচনীয়। ভেঙে গিয়েছে অনেকটাই। 14/14 আপন পাইনের কথায়, ‘পানিহাটি পৌরসভায় আবেদন করা হয় সারাইয়ের জন্য। তাদের তরফে শর্ত, ঘাটটি তাদের নামে লিখে দিতে হবে।’ অর্থাৎ ব্যক্তিগত মালিকানা চলে যাবে সরকারের ঘরে। এই নিয়ে এখনও টানাপোড়েন চলছে পাইন বাড়ি ও পৌরসভার মধ্যে। এখন আশা, তাঁদের মনের কথা যেন শোনেন রাধামাধব।