ফ্যাটি লিভার হল লিভারের আকৃতি হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া, যার ফলে গ্যাস, বদ হজমের মতো সমস্যা দেখা দেয়। মূলত ফ্যাটি লিভার দুই রকমের হয়। প্রথমত অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার যা অত্যাধিক মদ্য পানের ফলে হতে পারে। দ্বিতীয়ত নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, এটি হয় তাদের যাদের স্থূলতা, ডায়াবিটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, মধুমেয় রোগ থাকে।
ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা যদি সময় মত না হয় তাহলে লিভার সিরোসিস, লিভার ফেলিওর অথবা লিভার ক্যান্সারের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি প্রথম পর্যায়ে উপসর্গ বিহীন থাকে বলে অনেকেই ফ্যাটি লিভারকে অসুস্থতার মধ্যে ধরেন না, আর সেখানেই করে ফেলেন ভুল। ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করতে হবে না হলে হতে পারে বড় বিপদ।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে বুঝতে পারবেন আপনার হয়েছে ফ্যাটি লিভার
ক্লান্তি: পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরেও যদি আপনি ক্লান্ত বোধ করেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্লান্তি ফ্যাটি লিভারের অন্যতম লক্ষণ বলে মনে করা হয়।
উপরের ডানদিকে পেটে অস্বস্তি: ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পেটের ওপরে ডানদিকে হালকা ব্যাথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয়। এই অবস্থাকে বলা হয় অ্যাসাইটস।
জন্ডিস: ফ্যাটি লিভারের অন্যতম লক্ষণ হলো জন্ডিস। রাতে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে ত্বক এবং চোখের চারপাশ হলুদ হয়ে যায়। ফ্যাটি লিভার যখন বাড়াবাড়ি পর্যায় পৌঁছে যায় তখনই হয়ে যায় জন্ডিস।
খিদে কমে যাওয়া: আপনার যদি ফ্যাটি লিভার থাকে তাহলে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে খিদে কমে যাবে আপনার। খিদে কমে যাওয়া এবং অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়ার মত লক্ষণ থাকলে বুঝতে হবে ফ্যাটি লিভার রয়েছে আপনার।
ওজনের পরিবর্তন: হঠাৎ করে যদি ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার রয়েছে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। এবারের কর্মহীনতার কারণেই এইভাবে বারবার ওজনের বাড়া কমা চলতে থাকে।
মানসিক বিভ্রান্তি: ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা দিলে শুধু পেটে নয় হতে পারে মস্তিষ্কের সমস্যা। অত্যাধিক ফ্যাটি লিভার হলে মানসিক বিভ্রান্তি, স্মৃতি লোপ এবং মনোনিবেশ করতে না পারার মতো সমস্যায় ভোগেন রোগীরা।
তৃষ্ণা বৃদ্ধি এবং প্রস্রাব: ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা থাকলে বারবার জল তেষ্টা পায় এবং অতিরিক্ত প্রস্রাব শুরু হয়ে যায়। এই একই লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায় ডায়াবিটিস হলেও।
সহজে ক্ষত: যকৃতের কর্মহীনতা আপনার শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে, ফলে খুব কম আঘাতেই আপনার শরীরে তৈরি হয় ক্ষত। শুধু তাই নয়, যে জায়গায় আপনার ক্ষত তৈরি হয়, সেখান থেকে রক্তপাত শুরু হলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।