দুই প্রজাতি (Species)-র সংমিশ্রণে জন্ম নেওয়া সন্তান! নৃতত্ত্বের ইতিহাসে এমন ঘটনা খুবই বিরল। কিন্তু তেমনই এক ঘটনার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দুই প্রজাতির সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছিল সন্তান। নিয়ানডার্থাল এবং ডেনিসোভান— দুই প্রজাতির বাবা-মায়ের থেকে এসেছিল এই শিশু।
নৃতাত্ত্বিকরা এখনও পর্যন্ত অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন নিয়ানডার্থাল সম্পর্কে। কিন্তু ডেনিসোভান প্রজাতির সম্পর্কে খুব বেশি জ্ঞান এখনও পর্যন্ত কারও কাছে নেই। এই প্রজাতি কোন সময় থেকে কোন সময় পর্যন্ত পৃথিবীতে থেকেছে, কী করে তারা বিলুপ্ত হল— তার ধারণা বিশেষ নেই। সেই ধারণাই এবার হয়তো কিছুটা পাওয়া যাবে বলে তাঁদের আশা। তেমনই আলো দেখাচ্ছে এই ‘ডেনি’। (আরও পড়ুন: আঁধার চিরে ধরা দিল দূরতম ছায়াপথ, চোখ মেলেই চমকে দিল জেমস টেলিস্কোপ)
কেন এই ডেনি? কীভাবে পাওয়া গেল তাকে?
২০১০ সাল নাগাদ সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে পাওয়া গিয়েছিল এই ডেনির দাঁত এবং হাড়ের টুকরো। বিজ্ঞানীরা তখনই বুঝতে পারেন এই দেহাবশেষ ডেনিসোভান প্রজাতির কারও। ডেনিসোভানরা প্যালিওলিথিক যুগে এশিয়ার বড় অংশ জুড়ে থাকত বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এর চেয়ে খুব বেশি তথ্য তাঁদের কাছে ছিল না। (আরও পড়ুন: আরও বেশি দ্রুত ঘুরছে পৃথিবী! মারাত্মক প্রভাবের আশঙ্কা)
এর পরে গত ১০ বছর ধরে এই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি গবেষণার কাজ হয়নি। উন্নত প্রযুক্তির অভাবেই আটকে ছিল কাজ। কিন্তু সম্প্রতি সেই গবেষণার কাজ এগিয়েছে। DNA বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা টের পেয়েছেন, এই শিশুর বাবা-মা দু’জন ছিল দুই আলাদা সম্প্রদায়ের। ডেনিসোভান এবং নিয়ানডার্থাল। সেই কারণেই এই আদিম শিশুর নামকরণ করা হয়েছে ডেনি।
দুই প্রজাতির মিশ্রণে তৈরি হওয়া এমন সন্তান পুরাতত্ত্ব এবং নৃতত্ত্বে বিরল। সেই কারণেই এই আবিষ্কার নিয়ে রীতিমতো উত্তেজিত বিজ্ঞানীমহল। আগামী দিনে পুরাতত্ত্ব এবং নৃতত্ত্বের গতিপথ অনেকটাই ঠিক করে দিতে পারে এই আবিষ্কার— এমনই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে ডেনিসোভানদের হারিয়ে যাওয়া কারণও খুঁজে পাওয়া যেতে পারে এর ফলে। তেমনই মনে করছেন তাঁরা।