প্রতি বছর ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবস পালন করা হয়। ২০২৪ সালের বিশ্ব জলাভূমি দিবস আগামীকাল, বুধবার। জীববৈচিত্র্য, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও খাদ্যনিরাপত্তার জন্য জলাভূমির ভূমিকা অপরিসীম। জলাভূমির গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইরানের রামসার শহরে পরিবেশ বিষয়ক এক সম্মেলনে জলাভূমির ব্যবহার ও সংরক্ষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি সই হয়। রামসার কনভেনশন হল বিশ্বব্যাপী পরিবেশ রক্ষার একটি সম্মিলিত প্রয়াস। ১৯৭৫ সালে রামসার কনভেনশন চুক্তি কার্যকর হয়। এখন পর্যন্ত ১৭২টি দেশ এ চুক্তি অনুমোদন করেছে এবং পৃথিবীর ২৫৬,১৯২,৩৫৬ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ২,৪৭১টি স্থান আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। রামসার কনভেনশনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে ইউনেসকো।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য, কৃষি, মৎস্য, পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো জলাভূমি। জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উদাহরণ হল খাল, বিল ও সুন্দরবন। পৃথিবী বিখ্যাত সুন্দরবন সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। শুধু সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষত সাইক্লোনের হাত থেকে দুই বাংলাকে বাঁচায় সুন্দরবন। সম্প্রতি সময়েও অবশ্য দুইবাংলা জুড়ে সুন্দরবনের বিপদাপন্নতা বেড়েই চলেছে। দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে বাংলাদেশে। তবে যাতে সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। ১৯৯২ সালে সুন্দরবনকে রামসার সাইট (রামসার কনভেনশন কর্তৃক আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জলাভূমি) হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ভারতের বৃহত্তম রামসার সাইট পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন জলাভূমি (৪২২০ বর্গ-কিমি)। অন্যদিকে ভারতের সবচেয়ে ছোট রামসার সাইট হ হিমাচল প্রদেশের রেণুকা জলাভূমি (০.২ বর্গ কিমি)। সর্বাধিক সংখ্যক রামসার সাইট যুক্ত রাজ্য হল উত্তর প্রদেশ। ভারতের সর্বাধিক সংখ্যক (8) রামসার সাইট রয়েছে এই রাজ্যে। ভারতে মোট ৬৪টি রামসার সাইট ছিল। বর্তমানে আরও ১১টি রামসার সাইট যুক্ত হয়েছে। এখন মোট ৭৫টি রামসার সাইট রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি রামসার সাইট হল পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। জলাভূমি সেকোনও অঞ্চলেই নিকাশি ব্যবস্থা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।