বর্তমানে ভারতের তিনটি প্রতিবেশী দেশ, অর্থাৎ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ আর্থিক সংকটের মুখে। এর আগে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা কঠিন আর্থিক সংকটের দিকে পড়েছিল, আর শ্রীলঙ্কার কী অবস্থা হয়ে সেটা সকলেরই জানা। আর এখন বাংলাদেশও সেই পথেই এগিয়েছে। তারাও এখন সাহায্যের জন্য একাধিক দেশের কাছে সাহায্য চাইছে। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান তিনটি দেশই ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের থেকে ঋণ চেয়েছে।
বাংলাদেশ প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে চেয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের থেকে। এমনটাই জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক সমস্যা দূর করার জন্য বাংলাদেশ কঠোর ভাবে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে জাপানের থেকেও ওপার বাংলা ২.৫-৩ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য চেয়েছে। ফলে এসব থেকে এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশ বর্তমানে আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে।
এরই মধ্যে ভারতের এই পড়শি দেশে এক লাফে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। বেড়েছে সারের দাম। এগুলোর নেপথ্যে মূল কারণ হিসেবে রয়েছে রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ। জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বাংলাদেশে। এইভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে। বর্তমানে সেটা বাড়তে বাড়তে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমাতে শেখ হাসিনার সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিসারদের বিদেশ ভ্রমন, যানবাহন কেনা কমাতে হবে।
বাংলাদেশের যে বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ছিল সেটাতেও টান পড়ছে ক্রমশ। বর্তমানে ওপার বাংলার বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার কমে ৩৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশি টাকার দামও নিম্নমুখী। এখন ১ ডলার অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকার দাম হল ১১২ টাকা।
বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগেই বিরোধীরা একাধিক ইস্যু পেয়ে গিয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। রয়েছে মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যবৃদ্ধির মতো জ্বলন্ত ইস্যু। আর এগুলোকেই হাতিয়ার বানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের মতে বাংলাদেশের সংকট এত সহজেই মিটবে না, কারণ বিশ্বব্যাপী যে মন্দা চলছে তার কুপ্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের রপ্তানির উপর। আর বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৪০ শতাংশই হল রেডিমেড গার্মেন্টস। কিন্তু এখন অর্ডার কম আসায় বাংলাদেশকে পড়তে হচ্ছে সমস্যার মধ্যে।
ফলে বিভিন্ন সমস্যার কারণে বাংলাদেশের এই আর্থিক সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ক্রমশ।