দেশে সর্বাধিক করোনাভাইরাস আক্রান্ত রাজ্যগুলির তালিকায় সাত নম্বরে রয়েছে বাংলা। অথচ করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে বাংলাকে বলার সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না।
মঙ্গলবার এবং বুধবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদী। বাংলা রয়েছে দ্বিতীয় দিনের সূচিতে। কিন্তু তার মধ্যেও কে কথা বলবে, তা নির্ধারণ করছে কেন্দ্র। সেইমতো রাজ্যের হাতে যে তালিকা এসেছে, তাতে বাংলা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। অথচ বাংলার করোনা পরিস্থিতি মোটেও স্বাভাবিক নয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
তবে বক্তার নাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্য কোনও সমীকরণ কাজ করছে না বলে দাবি করেছে কেন্দ্রের সূত্র। তাঁদের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন মোদী। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সব মুখ্যমন্ত্রীরা কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। দ্বিতীয় দিনে সূচি অনুযায়ী বক্তাদের মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে সংক্রমণের হার বেশি। অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে সবথেকে বেশি পরিযায়ী ফিরেছেন। ফলে এই সিদ্ধান্তের মধ্যে রাজনৈতিক যোগ খোঁজা অহেতুক। তাছাড়া কথা না বললেও চিঠি লিখে রাজ্যগুলিকে নিজেদের মতামত জানানোর কথা বলেছেন মোদী।
সেই ব্যাখ্যায় অবশ্য সন্তুষ্ট হন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, মোদীর প্রথম বৈঠক থেকেই সেভাবে বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিশেষত আগের একটি বৈঠকে যেভাবে মমতা ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন, সেজন্যই কি বাংলাকে বক্তা তালিকায় রাখা হয়নি? সিপিএমের তরফেও একই বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, বাংলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে। তা সত্ত্বেও যখন বাংলাকে বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাহলে এটাই ধরতে হবে যে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে মাথাব্যথা নেই কেন্দ্রের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, তাহলে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি বিজেপি যে হট্টগোল করছে, তা কি আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে করা হচ্ছে?
যদিও সেইসব বিতর্কের মধ্যে ঢোকেনি নবান্ন। রাজ্যের তরফে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, যখন খালি দর্শক এবং শ্রোতা হয়ে থাকতে হবে, তখন বৈঠকে মমতার না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে কোনও আমলা রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করবেন।