লোকালয়ে ঢুকে গিয়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক দাঁতাল। তার জেরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় হাতিটির কান। মৃত্যু হয় হাতিটির। সেই ঘটনায় শুক্রবার দু'জনকে গ্রেফতার করা হল। ঘটনাটি তামিলনাড়ু নীলগিরির।
সেই নৃশংস ঘটনার একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, হাতিটিকে লক্ষ্য করে জ্বলন্ত কাপড় জড়িয়ে একটি কাঠ ছোড়া হয়েছে। মাথায় তখনও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তারস্বরে চিৎকার করতে করতে হাতিটি দৌড়াতে থাকে। দৃশ্যতই প্রবল যন্ত্রণায় ছিল। গত ১৯ জানুয়ারি হাতিটির মৃত্যু হয়।
মাসিনাগুড়ির মুদুমালাই ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি ডিরেক্টর এলসিএস শ্রীকান্ত জানান, গত নভেম্বর থেকে হাতিটিকে অনুসরণ করছিল বন দফতর। হাতিটির পিঠে আঘাত ছিল। সেটি লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। জঙ্গলে ফিরছিল না। ডিসেম্বরে ঘুমপাড়ানি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও হাতিটি অত্যন্ত দুর্বল ছিল এবং খুব ধীরে ধীরে চলাচল করছিল।
তারইমধ্যে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হাতিটির কানে গুরুতর আঘাত লক্ষ্য করেন বন দফতরের আধিকারিকরা। ১৯ জানুয়ারি সকালে হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করা হয়। তারপর চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পথে হাতিটির মৃত্যু হয়। সেটির ময়নাতদন্ত হয়ে গিযেছে। রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে বন দফতর।
সেই ঘটনায় ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনের আওতায় প্রসাদ (৩৬) এবং রেমন্ডকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়েছে। নীলগিরির জেলাশাসক জে ইনোসেন্ট দিব্যা বলেন, ‘এটা হৃদয়-বিদারক এবং নৃশংস। এরকম ঘটনা রোখার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ ধৃত দু'জন যে রিসর্ট চালাচ্ছিল, তাও ইতিমধ্যে সিল করে দিয়েছে বন দফতর।
বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর অ্যানিম্যাল রাইটস রাইটস অ্যান্ড এডুকেশনের এস মুরলীধরন বলেন, 'এটা অপরাধমূলক কাজ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে কঠোর শাস্তির বিধান নেই। কিন্তু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় পদক্ষেপ করা উচিত আদালতের এবং আইনের বিধানের বাইরে গিয়ে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত। যাতে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।'