ভারত ২০৭৫ সালের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে, এমনই দাবি করল বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাকস। শুধুমাত্র জাপান এবং জার্মানিকে নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও চ্যালেঞ্জ করতে প্রস্তুত, গোল্ডম্যান স্যাকসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমনই বলা হয়েছে। বর্তমানে, জার্মানি, জাপান, চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত। উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি, উচ্চ মূলধন বিনিয়োগ এবং কর্মীদের ক্রমবর্ধমান উত্পাদনশীলতা আগামী বছরগুলিতে ভারতের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে, এমনই প্রকাশিত হয়েছে প্রতিবেদনে।
গোল্ডম্যান স্যাকসে কর্মরত ভারতের অর্থনীতিবিদ শান্তনু সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘আগামী দুই দশকে, ভারতের জনবিন্যাসের নিরিখে নির্ভরশীল ব্যক্তির অনুপাত আঞ্চলিক অর্থনীতির মধ্যে সবচেয়ে কম হবে’। নির্ভরশীলতার অনুপাত মোট শ্রম সক্ষম জনসংখ্যার নিরিখে নির্ভরশীলদের সংখ্যা কত, সেই হিসেবে পরিমাপ করা হয়।
শান্তনু সেনগুপ্ত বলেছেন, ভারতের দ্রুত বাড়তে থাকা জনসংখ্যাকে আগামী সম্ভাবনাতে পরিণত করার চাবিকাঠি হল শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়ানো। তিনি বলেন, আগামী ২০ বছরের জন্য বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে ভারতেই নির্ভরশীলতার অনুপাত সবচেয়ে কম হবে। গোল্ডম্যান স্যাকস রিপোর্টে বলেছে যে বেসরকারি খাতে উৎপাদন ও পরিষেবা বৃদ্ধির জন্য এটি উপযুক্ত সময়। এটি দেশে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এবং একটি বৃহৎ শ্রমশক্তিকে ধারণ করতে সহায়তা করবে।
গোল্ডম্যান ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চালক হবে মূলধন বিনিয়োগ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গত ১৫ বছরে ভারতে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের হার কমেছে। শ্রমশক্তিতে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার পুরুষদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, ভারতে সমস্ত কর্মজীবী বয়সের মহিলাদের মাত্র ২০ শতাংশ কর্মরত রয়েছেন৷ নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়ির কাজে যুক্ত থাকার ফলে কর্মক্ষেত্রে আসতে পারছেন না মহিলারা।’
মোট রপ্তানি ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেন উল্লেখ করেছে অর্থনৈতিক সংস্থাটি। এস এণ্ড পি গ্লোবাল এবং মরগান স্ট্যানলিও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। প্রসঙ্গত, এস এণ্ড পি গ্লোবাল বা মরগান স্ট্যানলি বিশ্বখ্যাত দুটি ফিনান্স কোম্পানি। গোল্ড স্যাকসের আগাম অনুমান সঠিক প্রমাণিত হয় কিনা তার জন্য দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দী অপেক্ষা করে থাকতে হবে ঠিকই, কিন্তু বিশ্ব জোড়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ভারত যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।