ছেলে তেলাঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদে একা থাকেন। কয়েকদিন ধরে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের দম্পতি। উদ্বিগ্ন হয়ে ফোন করেছিলেন বেঙ্গালুরুর আত্মীয়কে। যিনি সুইগির ডেলিভারি বয়ের সহায়তায় ওই যুবকের সন্ধান পান। সেই কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
সোমবার সাইকিরণ কান্নান নামে এক ব্যক্তি টুইটারে জানান, রবিবার রাতে এক তাঁর মায়ের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ফোন করেছিলেন। ওই বৃদ্ধ দম্পতি জানিয়েছিলেন যে গত কয়েকদিন ধরে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। যিনি তেলাঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদে একা থাকেন। তাঁর ফোন বেজে যাচ্ছে। ছেলের বাড়ির ঠিকানা দিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। সেই পরিস্থিতিতে ওই যুবকের বাড়ির ঠিকানায় সুইগি ইনস্টামার্ট থেকে বিস্কুট এবং জুসের অর্ডার দেন সাইকিরণের মা। পরিকল্পনাটা সোজা ছিল, ঠিকভাবে ডেলিভারি হলেই বোঝা যাবে যে ওই যুবক সুরক্ষিত আছেন কিনা।
আরও পড়ুন: গরম দুধ ঢেলে চকোলেটের গণেশ মূর্তিকে গলিয়ে বিসর্জন, ফুড ব্লগারের কীর্তি নিয়ে ছিছি
সেই পরিকল্পনা কীভাবে এগিয়েছিল?
সাইকিরণ জানান, রবিবার রাত ৯ টা ১৫ মিনিট ওই যুবকের বাড়ির কাছে যান সুইগির ডেলিভারি বয় শ্রীনাথ শ্রীকান্ত। কিন্তু ঠিকানাটা এমন ছিল যে ওই যুবকের বাড়ি খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই পরিস্থিতিতে সুইগির ডেলিভারি বয়কে বিস্কুট এবং জুসের সরঞ্জাম রেখে দিতে বলেন তাঁর মা। তারপর ফের দম্পতির সঙ্গে কথা বলেন। ওই যুবকের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুর নম্বর জোগাড় করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ওই যুবকের বাড়ির সঠিক ঠিকানার বের করে ফেলেন। তবে ততক্ষণে ঘড়িতে ৯ টা ৪৫ বেজে গিয়েছে। সুইগির ডেলিভারি বয়কে ফোন করেন। সেইসময় যে ডেলিভারি দিচ্ছিলেন, তা শেষ করে তিনি ওই যুবকের নয়া ঠিকানায় যেতে রাজি হন।
তারপর কী হল?
সাইকিরণ জানান, কিছুক্ষণ পর তাঁর মা'কে ফোন করেন শ্রীনাথ। সেইসময় তিনি ওই যুবকের ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। যুবককে নিজের ফোন দেন। জানা যায়, দিনকয়েক আগে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন ওই যুবক। তাঁকে কড়া ডোজের ওষুধ খেতে হচ্ছে। মা-বাবা যাতে উদ্বিগ্ন না পড়েন, সেজন্য ফোন ধরেননি। সাইকিরণ বলেন, ‘সুইগির ডেলিভারি বয় ওই যুবককে বিস্কুট এবং জুস (প্রথমে যুবকের সন্ধান না পাওয়ায় যা ওই ব্যক্তিকে নিয়ে নিতে বলেছিলেন আমার মা) দেন। তখন সাড়ে ১০ টা বাজে। মানবতা সত্যিই আমাদের সমাজে এখনও আছে।’
ওই ব্যক্তির টুইট ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যেভাবে সুইগির মাধ্যমে ওই যুবকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবং যেভাবে সুইগির ডেলিভারি বয় সাহায্য করেছেন, তাতে মুগ্ধ হয়েছেন নেটিজেনরা। অনেকে নিজেদের কাহিনিও তুলে ধরেছেন। তেমনই একজন বলেন, ‘আমি যদি ৩০ মিনিট ফোন না ধরি বা ৩০ মিনিটের মধ্যে ফের ফোন না করি, তাহলে মা এবং দাদা বাড়িতে আইসক্রিম পাঠিয়ে দেয়।’