Manappuram Finance New CEO: কোনও নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থায়(NBFC) CEO ৭০ বছর বয়স পর্যন্তই কাজ করতে পারবেন। তারপর তাঁকে অবসর নিতেই হবে। RBI-এর নিয়ম এমনটাই বলছে। আর সেই নিয়ম মেনেই নয়া সিইও খুঁজতে শুরু করেছে মনপ্পুরম ফাইন্যান্স। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম NBFC এটি।
বর্তমানে এমডি এবং সিইও-র পদে রয়েছেন ভি পি নন্দকুমার। তাঁর বয়স এখন ৬৮ বছর। ফলে হাতে আর মাত্র ২ বছর সময় রয়েছে। তাই যা করার তাড়াতাড়িই করতে হবে। ভি পি নন্দকুমার নিজেও এমনটা বলছেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই কয়েকজন সম্ভাব্য CEO-কে অন্তিম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আগামী ত্রৈমাসিকেই তাদের নাম ঘোষণা করতে পারে সংস্থা। আরও পড়ুন: বড় শহর নয়, মফস্বলে থেকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোমেই খুশি অনেকে, জানুন আসল কারণ
তবে বাইরে থেকে আসা নতুন কোনও আধিকারিক নন। সংস্থার সঙ্গে কাজ করা কোনও পুরনো আধিকারিককেই বসানো হবে প্রধানের পদে। এই বিষয়ে বর্তমান সিইও জানান, 'মনপ্পুরমে বরাবরই কর্মীদের শেখানো, গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর সেই কারণে এই ক্ষেত্রেও সংস্থায় কাজ করা, অভিজ্ঞ কাউকে নিযুক্ত করা হবে।'
ত্রিশূর সংস্থার প্রধান দফতর। দেশের NBFC-র বাজারের ১৬%-ই তার দখলে। জনপ্রিয়তাও অজানা নয়। মুথুট ফাইন্যান্সের পরেই তাদের স্থান। মনপ্পুরমের অধীনে প্রায় ১৯,১৯০ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। মনপ্পুরম গোল্ড লোনের কথাও কারও অজানা নয়। দেশের প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ মনপ্পুরমের স্বর্ণ ঋণের গ্রাহক। ফলে এই বিপুল কর্মকাণ্ড সামলানোর মতো সিইও নির্বাচন করার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ হবে না।
গত ৬ মাস ধরেই নয়া সিইও-র সম্ভাব্য মুখ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে বোর্ড। সূত্রের খবর, খোদ নন্দকুমারই এখনও কাকে তাঁর পদ দেবেন, সেই বিষয়ে মনস্থির করে উঠতে পারেননি।
কিন্তু সময় তো আর থেমে থাকে না! আগামী মার্চের শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে অন্তত সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতেই হবে। এরপর একজনকে বেছে নেওয়া হবে। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়।
সূত্রের খবর, এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাঁকে তালিম দেওয়া হবে। সিইও-র গুরুদায়িত্ব সামলানো তো আর মুখের কথা নয়! ফলে কাজটা যত দ্রুত সেরে ফেলা যায়, ততই মঙ্গল।
বোর্ড প্রাথমিকভাবে সংস্থার অভ্যন্তরীণ উচ্চপদস্থ প্রার্থীদের নাম এই তালিকায় রাখবে। বিশেষ করে নন্দকুমারের পরিবারের সদস্যদের কথাও বিবেচনা করা হবে। তিনি বর্তমানে মনপ্পুরমের ৩৫.১৮% শেয়ার হোল্ডার।
সূত্রের খবর, নন্দকুমারের তিন সন্তানের কেউই কোম্পানির লাগাম ধরার বিষয়ে আগ্রহী নন। তাঁর বড় মেয়ে সুমিতা নন্দন পেশায় চিকিত্সক। ২০১২ সালে নন্দকুমার তাঁকে তাঁর ব্যবসায় ঢোকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু চিকিত্সকের কি আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারবারে মন টেকে! অল্প পরেই নিজের ডাক্তারির পেশাতেই ফিরে গিয়েছিলেন সুমিতা।
নন্দকুমারের বড় ছেলে, সুরজ নন্দন ব্রিটেনে থাকেন। তাঁর নিজের আলাদা ব্যবসা রয়েছে। সেখানে দিব্যি আছেন তিনি। বাবার সংস্থায় কাজ করার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। এদিকে ছোট ছেলে, সুহাস-ই একমাত্র বাবার সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনপ্পুরম ফাইন্যান্সে কাজ করেন। তবে সিইও-র পদে বসার বিষয়ে তাঁরও আগ্রহ নেই বলে জানা গিয়েছে।
ফলে সংস্থার উচ্চপদস্থ, কৃতী কর্মীদের কথাই ভাবা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে প্রধান হলেন আর্থিক বিষয়ক প্রধান বিন্দু এ. লাল এবং রাজু নারায়ণন। এঁরা উভয়েই মনপ্পুরমে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন। NBFC-র ব্যবসাকে হাতের তালুর মতো চেনেন। ফলে তাঁদের উপরে ভরসা করা যেতেই পারে। আরও পড়ুন: মাত্র ১৪ টাকার শেয়ারই এখন বেড়ে দাঁড়াল ৩৭০ টাকা! বোনাস শেয়ারও ইস্যু এই স্টকে
আপাতত কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাই নিয়ে ঘুম উড়েছে ৬৮-র নন্দকুমারের। ১৯৪৯ সালে নন্দকুমারের বাবা, ভি সি পদ্মনাভ মনপ্পুরমের সূচনা করেন। স্থানীয় স্তরে সোনা বন্ধক রাখা, সুদে ধার দেওয়া, অর্থাত্ অনেকটা মহাজন-এর মতো কায়দায় ব্যবসা করতেন। তবে সেটি খুব বেশি বড়-ও ছিল না। বালাপদ নামের এক ছোট্ট গ্রামেই ছিল সেই কারবার। তবে সময়ের সঙ্গে আজ সেই সংস্থাই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম NBFC। ২৫টি রাজ্য জুড়ে তাদের প্রায় ৪,১৯০টি শাখা। কাজ করেন ১৭,৫০০-রও বেশি কর্মী।