২০২২ সালে উত্তরপূর্বের মণিপুরে বড় জয় পেয়েছিল বিজেপি। এরপরই দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন এন বীরেন সিং। তবে একবছর ঘুরতে না ঘুরতেই বীরেনের 'সংসারে' আগুন লাগার ইঙ্গিত মিলেছে। সাম্প্রতিককালে বিজেপির তিনজন বিধায়ক প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মণিপুরে। এরপরই জল্পনা শুর হয় যে বীরেনে হয়ত না খুশ রাজ্য বিজেপির একাংশ। এরই মাঝে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক। তবে এই 'সংকট' নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বীরেন সিং দাবি করেন, 'দলের অন্দরে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সরকার কোনও সংকটে নেই।' তিনি দাবি করেন, একজন মন্ত্রী তাঁর থেকে ছুটি নিয়ে ইন্দোরে গিয়েছেন। আরও তিনজন বিধায়ক চিকিৎসার জন্য দিল্লিতে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন বীরেন সিং।
উল্লেখ্য, ২০ এপ্রিল ওয়াংজিং টেনথা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক পওনম ব্রজেন সিং মণিপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। গত কয়েক সপ্তাহে এই নিয়ে তৃতীয় বিজেপি বিধায়ক প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ব্রজেন অবশ্য নিজের পদত্যাগ প্রসঙ্গে দাবি করেন যে তিনি 'কিছু ব্যক্তিগত কারণে' পদত্যাগ করেছেন। এর আগে, গত ১৭ এপ্রিল মণিপুরের লাংথাবাল বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক করম শ্যাম মণিপুর পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে মণিপুর পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এই একই অভিযোগ তুলে ১৩ এপ্রিল মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক থকচম রাধেশ্যাম সিং।
এরই মধ্যে সম্প্রতি এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, মণিপুরের ১০ থেকে ১২ জন বিজেপি বিধায়ক দিল্লিতে গিয়েছেন বীরেনের বিরুদ্ধে নালিশ করতে। বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছেন দলের একাংশ। এর আগেও ২০২২ সালের নির্বাচনের পর বীরেনের মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছিল বিশ্বজিৎ সিং-এর নাম। যদিও শেষ পর্যন্ত বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রী রেখেই সরকার গঠন করে গেরুয়া শিবির। প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে মণিপুরের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে ৩২টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস মাত্র পাঁচটি, এনপিপি সাতটি আসনে জয় পায়। নাগা পিপলস ফ্রন্ট পাঁচটি এবং কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স দুটি আসন পেয়েছিল। নির্দলরা জিতেছিলেন তিনটি আসনে।