রিচা বাঙ্কা
বহুদিন ধরেই দিল্লি হাই কোর্টে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে মামলা চলছিল। সেই মামলার রায় প্রকাশ করা হয় গতকাল। তবে উচ্চ আদালতের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে কোনও রায় দিতে পারেননি। এই আবহে মহিলা কর্মী এবং আবেদনকারীরা তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। আবেদনকারীদের দাবি ছিল, বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনের চোখে অপরাধ বলে গণ্য করা উচিত।
মামলার রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজীব শকধেরের বক্তব্য, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এটি ব্যতিক্রম। স্ত্রীদের অসম্মতিতেও স্বামীরা যে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারেন, এই বিষয়টি ‘নৈতিকভাবে বিরোধী’। তবে সি হরিশংকর বলেন যে এটি কোনও আইন লঙ্ঘন করেনি। তিনি সংবিধানের ৩৭৬বি ও ১৯৮বির কথা তুলে ধরেন। এবং তিনি বলেন, বৈবাহিক ধর্ষণ অসাংবিধানিক নয়। আবেদনকারীদের পক্ষে সওয়াল করা অ্যাডভোকেট কলিন গনসালভেস এই রায়ের প্রেক্ষিতে বলেছেন যে রায়টি হতাশাজনক এবং তারা এমন রায় আশা করেননি।
আরও পড়ুন: ‘সুরক্ষা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার মধ্যে সামঞ্জস্য চাই’, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে জেলবন্দিদের কী হবে এবার?
আবেদনকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘এত তর্ক-বিতর্কের পর আমরা বিভক্ত রায় আশা করিনি। আমরা আশা করেছিলাম যে দিল্লি হাই কোর্ট বৈবাহিক ধর্ষণের মতো একটি প্রথা বন্ধ করে দেবে। এমনটা ইতিমধ্যেই অনেক দেশই করা হয়েছে। এটি আসলে হতাশাজনক কারণ বিষয়টি এত দিন ধরে চলছে এবং আমার মক্কেল বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার, তিনি এখনও স্বস্তির অপেক্ষায় রয়েছেন।’
অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক উইমেনস অ্যাসোসিয়েশনের (AIDWA) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম ধাওয়ালে এই মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে অন্যতম। রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা হতাশ যে বিবাহিত মহিলারা যে সহিংসতার শিকার হয় তা নিয়ে আদালত বিবেচনা করেনি এবং আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে আবেদন জানাব। আমরা চাই শেষ পর্যন্ত যাতে বিবাহের মাধ্যমে যৌন সহিংসতার শিকার নারীরা ন্যায়বিচার পান।’ অল ইন্ডিয়া প্রগ্রেসিভ উইমেনস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কবিতা কৃষ্ণান বলেছেন, হাই কোর্ট শুধুমাত্র মামলাটিকে সুপ্রিম কোর্টের দিকে ‘ঠেলে দিয়েছে’। তিনি বলেন, ‘রায়টি খুবই হতাশাজনক এবং বিরক্তিকর। আইনি সমস্যাটি খুবই স্পষ্ট এবং এটি ধর্ষণের শিকার এক শ্রেণির স্ত্রীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ। আমি আশা করি যে সুপ্রিম কোর্ট এই লজ্জাজনক আইনটি অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় সাহস এবং স্পষ্টতা দেখাবে।’