ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের সবথেকে সিনিয়র কূটনীতিককে তলব করল পাকিস্তান সরকার। হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত ‘ধর্ম সংসদে’ মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই এই তলব বলে জানা গিয়েছে। ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে ইসলামাবাদের বিদেশ মন্ত্রকে তলব করা হয়েছিল। সেখানে ‘ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী বিদ্বেষ’ ছড়ানো প্রসঙ্গে পাক সরকার নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান এবং সেই উদ্বেগের বিষয়টি ভারত সরকারকেও জানাতে বলেন ভারতীয় কূটনীতিককে।
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকে ভারতীয় কূটনীতিককে তলব করার বিষয়ে ভারতের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এদিকে পাকিস্তানি পক্ষ ভারত সরকারকে প্রভাবিত করতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলে, ‘সহিংসতার ডাক দেওয়ার পরও কেউ কোনও দুঃখ প্রকাশ করেনি বা ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি খুবই নিন্দনীয়।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের বেদ নিকেতন ধামে ধর্ম সংসদের আয়োজন করা হয়েছিল। ধর্ম সংসদে প্ররোচণামূলক বক্তব্য পেশ করে হিংসার ডাক দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন উপস্থিত সাধুরা। প্রকাশ্যে কট্টরপন্থার জয়জয়কার দেখা যায় সেই ধর্ম সংসদে। এভাবে প্রকাশ্যে হিংসা ছড়িয়ে দেওয়ার ডাকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
এদিকে ঘটনা ঘিরে অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এই আবহে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র ত্যাগীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তিনি উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের প্রাক্তন প্রধান। পরে ইসলাম ছেড়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। তাছাড়া এই ঘটনায় এফআইআর-এ সন্ন্যাসীনি অন্নপূর্ণা মা ও হিন্দু মহাসভার সাধারণ সম্পাদক ধর্মদাস মহারাজের নামও যুক্ত হয়। উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিজিপি অশোক কুমার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, 'বিদ্বেষমূলক বার্তা নিয়ে এমন মন্তব্য কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না।'
প্রসঙ্গত, যে ভিডিও ক্লিপ নিয়ে কার্যত প্রবল হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে, সেখানে এক বক্তাতে নাথুরাম গডসের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে দেখা গিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বিরুদ্ধেও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। এছাড়াও বড়দিন পালন নিয়েও হুঁশিয়ারি উঠে এসেছিল ওই ভিডিয়োতে।