দিনকয়েক আগেই তাঁর হাতে পদ্মশ্রী তুলে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাখ কোবিন্দ। প্রয়াত হলেন সেই ‘নন্দ মাস্টার’। তাঁর বয়স ১০০ পেরিয়ে গিয়েছিল।
1/8 দিনকয়েক আগেই তাঁর হাতে পদ্মশ্রী তুলে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাখ কোবিন্দ। প্রয়াত হলেন সেই ‘নন্দ মাস্টার’। তাঁর বয়স ১০০ পেরিয়ে গিয়েছিল। (ফাইল ছবি, সৌজন্য পিটিআই)
2/8 একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ‘নন্দ মাস্টার’। ওড়িশার জাজপুর জেলার করোনা হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে ভুবনেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেখানেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ফাইল ছবি, সৌজন্য পিটিআই)
4/8 ওড়িশার জাজপুর জেলার কান্টিরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন নন্দকিশোর প্রুস্তি। ওড়িশার ঐতিহ্যশালী ‘চটশালি’ বা টোল শিক্ষাদান প্রথার তিনিই সম্ভবত শেষ প্রতিনিধি ছিলেন। প্রতিদিন ভোরে তাঁর বাড়ির এই টোলে শিক্ষালাভ করতে হাজির হত শিশুরা। খুদে পড়ুয়াদের ওড়িয়া অক্ষরমালা ও গণিতের সাধারণ পাঠ দিতেন। আবার সন্ধ্যা ৬টায় টোলে উপস্থিত হতেন বয়স্ক পড়ুযারা, যাঁরা এখনও নাম সই করতে জানেন না।
5/8 নন্দকিশোর নিজেও হয়ত নিরক্ষর থাকতেন যদি না শৈশবে তাঁকে জাজপুরের মামাবাড়িতে না পাঠানো হত। সেখানে থেকেই ইংরেজ শাসিত ভারতে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের প্রাথমিক পাঠ সম্পূর্ণ করার পরে কটকে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর মামা। কিন্তু তাতে আপত্তি তুলেছিলেন নন্দকিশোরে বাবা। মামাবাড়ির পাট চুকিয়ে বাবাকে খেতের কাজে সাহায্য করতে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল নন্দকিশোরকে।
6/8 গ্রামে সেই সময় কোনও স্কুল ছিল না। এই কারণে শিশুদের মধ্যে পুঁথিগত শিক্ষার অভাব লক্ষ্য করেছিলেন নন্দ। বিষয়টি তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তাই নিজের সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা সম্বল করেই শিশুদের লেখাপড়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন নন্দকিশোর, এবং অবশ্যই বিনামূল্যে।
7/8 তিনি বলেছিলেন, ‘দেখতাম ছেলেমেয়েদের মধ্যে পড়াশোনার কোনও চর্চাই নেই। সকলেই অশিক্ষিত। আমি তাদের গাছতলায় পড়াতে শুরু করলাম। প্রথম দিকে গিয়ে ধরে আনতে হত, কিন্তু ক্রমে ওদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তৈরি হল। আমি শুধু চাই ওরা বড় হয়ে ভালো মানুষ তৈরি হোক।’ এভাবেই গ্রামের তিন প্রজন্মকে একক চেষ্টায় শিক্ষিত করার দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন ‘নন্দ মাস্টার’। বিনিময়ে আশা করেননি এক পয়সাও।
8/8 'নন্দ মাস্টারের' প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, 'নন্দ প্রুস্তির প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। ওড়িশায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে গিতে তিনি যে ছাপ রেখে গিয়েছেন, তা প্রজন্মের পর প্রজন্মের মানুষ মনে রাখবেন। কয়েক সপ্তাহ আগে পদ্ম পুরস্কারের অনুষ্ঠানে উনি দেশের নজর কেড়েছিলেন। পেয়েছিলেন ভালোবাসা। ওম শান্তি।' (ফাইল ছবি, সৌজন্য এএনআই)