ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সব ধর্মকেই সমান ভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এখানে। সবারই নিজের নিজের ধর্ম পালনের অধিকার আছে। তবে ১৯৭৬ সালের আগে সাংবিধানিক ভাবে ভারত 'ধর্মনিরপেক্ষ' ছিল না। তবে দেশের কোনও নির্দিষ্টি 'সাংবিধানিক ধর্ম' ছিল না। কিন্তু এবার দেশে 'সাংবিধানিক ধর্ম' চালুর দাবিতে দায়ের হল আবেদন।
1/5 ১৯৭৬ সালে সাংবিধানির সংশোধীর মাধ্যমে দেশের সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল 'ধর্মনিরপেক্ষ'। এর আগে সরকারি ভাবে ভারত 'ধর্মনিরপেক্ষ' না হলেও ভারতীয় সংস্কৃতি চিরকালই ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিতেই বিশ্বাস করে এসেছে। এদিকে দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চিরকালই সংখ্যাগুরু ছিলেন, তবে কোনও কালেই ভারতের কোনও সাংবিধানিক ধর্ম ছিল না। তবে সম্প্রতি গোটা ভারতের জন্য 'সাংবিধানিক ধর্ম' চালুর দাবিতেই জনস্বার্থ মামলার আবেদন দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে।
2/5 আবেদনকারী মুকেশ কুমার এবং মুকেশ মনবীর সিংয়ের দাবি, দেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নয়, একটিই ‘সাংবিধানিক ধর্ম’ থাকবে। এর পক্ষে যাতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিকা দেয়, সেই প্রেক্ষিতেই দায়ের হয় এই জনস্বার্থ মামলা। এদিকে এমন একটি আবেদন জমা পড়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। আবেদনকারীকে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করেন, এমন একটি আবেদন দায়ের করার চিন্তা তাঁদের মাথায় এল কোথা থেকে?
3/5 সুপ্রিম বিচারপতিরা আবেদনকারীকে প্রশ্ন করেন, দেশের নাগরিকদের কি নিজ নিজ ধর্ম পালন করা থেকে বাধা দেওয়া যায়? আপনি বলছেন একটিই সাংবিধানিক ধর্ম থাকা উচিত। আপনি কি নাগরিকদের তাঁদের নিজস্ব ধর্ম পালন করা থেকে আটকাতে পারবেন? এটা কি ধরনের আবেদন? এই আবেদনের মধ্য দিয়ে তিনি কী পাওয়ার আশা করছেন?
4/5 এদিকে আবেদনকারীরা জানান, তাঁরা সমাজকর্মী। সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে দেশের জন্য নির্দিষ্ট সাংবিধানিক ধর্ম চালুর দাবিতে তাই এই জনস্বার্থ মামলার আবেদন করেছেন। উল্লেখ্য, সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনও নাগরিক যদি দেখেন যে তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন তিনি। তবে এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা অন্যান্য নাগরিকের ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের দাবিতে আবেদন করেন। যাতে বেশ বিরক্ত হন সুপ্রিম বিচারপতিরা। উল্লেখ্য, সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে দেশের সকল নাগরিককে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
5/5 সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দেয়। শীর্ষ আদালত জানায়, ১৯৫০ সালের এক সাংবিধানিক আদেশ বাতিল করার আবেদন করা হয়েছে। তবে কোন সাংবিধানিক আদেশের কথা বলা হচ্ছে, আবেদনে তার উল্লেখ নেই। কীসের ভিত্তিতে এই আবেদন করা হয়েছে তা জানাতে পরেননি আবেদনকারী। এরপরই আদালত তাঁর আবেদনটি খারিজ করে দেয়।