ছত্তিশগড়ের ২০০০ কোটি টাকার আবগারি কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারির জন্য 'এক্তিয়ারের সীমা লঙ্ঘন' করছে ইডি। এমনই পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে শীর্ষ আদালতের কাছে কার্যত 'ধমক' শুনতে হল কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউলের বেঞ্চের তরফে অভিযুক্তর জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
1/7 কয়েক মাস আগে ছত্তিশগড় আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতার ভাই আনওয়ার ধীবরকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় শীর্ষ আদালত। গতকাল এই মামলার শুনানি চালকালীন আনওয়ারের জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, এই মামলায় ইডির তদন্তের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। সেখানেই ইডিকে সুপ্রিম বকুনির মুখে পড়তে হয়।
2/7 এই মামলায় অভিযুক্ত আনওয়ারকে রক্ষাকবচ প্রদান করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেই সেই অভিযুক্তের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ইডি। এই আবহে ইডিকে 'এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ' করার জন্য ধম দেয় শীর্ষ আদালত। এর আগে তদন্তকারীদের দাবি ছিল, অন্তত ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আরও দাবি, রাজ্যের উচ্চপদস্থ আমলা এবং শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদদের মদতেই এই দুর্নীতির ছক কষা হয়েছে।
3/7 সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, 'অতিরিক্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে ইডি নিজের এক্তিয়ারের সীমা লঙ্ঘন করছে।' এর আগে এই মামলায় ইডিকে কোনও ধরনের কড়া পদক্ষেপ করতে বারণ করেছিল শীর্ষ আদালত। এমনকী আপাতত এই মামলায় ইডি তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশও দেওয়া হয়েছিল। তবে ইডি নিজেদের মতো কাজ করতে থাকে। এমনকী শীর্ষ আদালতের রক্ষাকবচ পাওয়া অভিযুক্তর বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। যাতে বেজায় চটেছে শীর্ষ আদালত।
4/7 এই নিয়ে বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল বলেন, 'আমরা একবার যখন বলে দিয়েছি যে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না, তাহলে আপনাদের (ইডি) পদক্ষেপ (গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি) কী এক্তিয়ারের সীমা লঙ্ঘন করছে না? আদালতে যখন বিষয়টি বিচারাধীন, তাহলে আপনারা কীভাবে এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেন?' এরপর অভিযুক্ত আনওয়ারের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা খরিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে কংগ্রেস নেতার ভাই আনওয়ারের জামিনের মেয়াদ আরও ৬ সপ্তাহ বৃদ্ধি করে শীর্ষ আদাল।
5/7 উল্লেখ্য, এই দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত আনওয়ার হলেন রায়পুরের মেয়র আইজাজ ধীবরের ভাই। গত মে মাসে রায়পুরে একটি হোটেলে তল্লাশির সময় পালাতে গিয়ে ইডির জালে ধরা পড়েছিলেন আনওয়ার। তাঁকেই জেরা করে এই ২০০০ কোটির দুর্নীতি সংক্রান্ত অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছিল ইডি। মদ পাচার এবং এর আড়ালে অর্থ তছরুপের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে বলে দাবি করে ইডি।
6/7 রাজ্যের প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি করেন ইডির তদন্তকারীরা। ইডির অভিযোগ, ছত্তিশগড়ের প্রতিটি মদের বোতল বিক্রির সঙ্গে এই দুর্নীতির যোগ রয়েছে। অবৈধ ভাবে টাকা তোলা হয়েছে মদ বিক্রির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের থেকেও। প্রসঙ্গত, আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ বা পিএমএলএ আইনে এই মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল ২০২২ সালের মে মাসেই। এর একবছর পর এই মামলায় বড় দাবি করে ইডি।
7/7 তদন্তকারীরা জানিয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই ২০০০ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এর আগে মার্চ মাসেও এই মামলায় হানা দিয়েছিল ইডি। উল্লেখ্য, ছত্তিশগড়ে কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মদের দোকান নেই। সেই রাজ্যের প্রায় ৮০০টি দোকানই রাজ্য সরকার দ্বারা পরিচালিত। অভিযোগ, এই রাজ্যে মদ বিক্রির সিন্ডিকেট চালাচ্ছিলেন আনওয়ার। তবে তাঁকে শাসকদল কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা মদত করছিল বলে দাবি ইডির।