প্রায় সাড়ে সাত বছর পর ভারতকে এক দিনের ক্রিকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাদের হারানোর মূল কারিগর মেহেদি হাসান মিরাজ। যিনি ৩৯ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তাঁর একার লড়াইয়ে ম্যাচের সব সমীকরণ বদলে যায়। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করে ম্যাচের আর এক নায়ক হন মুস্তাফিজুর রহমান।
১৩৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ জয়ের থেকে ৫১ রান দূরে ছিল তারা। কিন্তু সেখান থেকে শেষ উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজুর রহমান দুরন্ত লড়াই করে ম্যাচ বের করে নেন। সেই সঙ্গে তাঁর শেষ উইকেটে গড়েন দুরন্ত এক নজির।
ভারতের বিরুদ্ধে শেষ উইকেটে সবচেয়ে বেশি রান করার নজির করেন মেহেদি হাসান এবং মুস্তাফিজুর। অর্থাৎ এক উইকেট হাতে থাকার সময়ে বড় পার্টনারশিপ করে ভারতের বিরুদ্ধে দলকে জিতিয়ে নজির গড়েন তাঁরা। এর আগে ২০০২ সালে জিম্বাবোয়ের ডগলাস মারিলিয়ার এবং গ্যারি ব্রেন্ট শেষ উইকেটে ২৪ রান করে দলকে জিতিয়েছিলেন। সেটাই ছিল এত দিন রেকর্ড। কিন্তু এ রবিবার বাংলাদেশের মেহেদি এবং মুস্তাফিজুর সেই রেকর্ড ভেঙে অপরাজিত ৫১ রান করে গড়ে ফেললেন নতুন নজির।
আরও পড়ুন: অজুহাত দেওয়ার জায়গা নেই,এই ধরনের পিচে খেলে অভ্যস্ত- ব্যাটারদের ধুইয়ে দিলেন রোহিত
টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। ডাহা ব্যর্থ ভারতীয় ব্যাটাররা। শাকিব আল হাসান এবং ইবাদত হোসেনের বলে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামে। পুরো ৫০ ওভারও ব্যাট করতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানে শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও শোচনীয় হাল ভারতের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইন আপের।
একমাত্র কেএল রাহুল ছাড়া সবাই ফ্লপ। ৭০ বলে ৭৩ রান করেন ভারতের সহ অধিনায়ক। এই রানটা ভারতীয় টোটাল থেকে বাদ দিলে দাঁড়ায় ১১৩। অর্থাৎ ভারতের বাকি দশ জন ব্যাটার মিলে করেছেন মাত্র ১১৩ রান। তবে এ দিন রোহিত শুরুটা খারাপ করেননি। কিন্তু মাত্র ২৭ করে ফিরে যান। ব্যর্থ শিখর ধাওয়ান (৭), বিরাট কোহলি (৯)। মাত্র ৪৯ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। ২৪ করে আউট হন শ্রেয়স আইয়ার।
আরও পড়ুন: বড় রান না পেলেও, আজহারকে টপকে ODI-এ নজির রোহিতের, ১০ হাজার রান করতে চাই আরও ৫৯৭
এর পর পাঁচ নম্বরে নেমে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন কেএল রাহুল। ৪টি ছয় এবং ৫টি চারের সাহায্যে ৭৩ রান করে আউট হন রোহিতের ডেপুটি। এদিন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি শাহবাজ আহমেদ। শূন্য রানে ফেরেন বাংলার অলরাউন্ডার। দুর্দান্ত বল করেন শাকিব আল হাসান। ১০ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন। চার উইকেট দেন ইবাদত হোসেন।
রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের ব্যাটিংও পুরো ফ্লপ। ক্রমাগত উইকেট হারায়। পার্টনারশিপ গড়ে তুলতেই পারেনি ওপার বাংলার ব্যাটাররা। একমাত্র লিটন দাস এবং শাকিব আল হাসান কিছুটা চেষ্টা করেন। কিন্তু অল্প রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমেও সেই রান যথেষ্ট ছিল না। ৪১ রানে আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ২৯ করেন শাকিব।
এই দু'জন ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। ১৩৬ রানে ৯ উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ উইকেটে ৫১ রান যোগ করেন মেহদি হাসান এবং মুস্তাফিজুর রহমান। ৩৮ রান করে দলকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন মেহদি। তিন উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ। অভিষেক ম্যাচেই দু'উইকেট নেন কুলদীপ সেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।