গুজরাট টাইটানসকে জিততে হলে শেষ ওভারে করতে হত ২২ রান। সেই ওভারে বল করতে এসেছিলেন মার্কো জানসেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি ২০তম ওভারটি তাদের কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠবে।
জানসেনের এই ওভারে প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান রাহুল তেওয়াটিয়া। দ্বিতীয় বলে হয় ১ রান। তৃতীয় বলে আবার ছক্কা হাঁকান রশিদ খান। চার নম্বর বলে কোনও রান হয়নি। ২ বলে বাকি ছিল ৯ রান। এর পর বাকি ২ বলে পরপর দু'টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫ উইকেটে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রশিদ খান।
আর সেই সঙ্গে আইপিএলে নজির গড়ল গুজরাট টাইটানস। শেষ ওভারে সর্বোচ্চ রান করে জয়ের তালিকায় দুইয়ে নাম লিখিয়ে ফেলল হার্দিক পাণ্ডিয়ার টিম। এর আগে ২০১৬ আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের (পঞ্জাব কিংস) বিরুদ্ধে শেষ ওভারে ২৩ রান প্রয়োজন ছিল রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টসের। সেই রান তাড়া করে ৪ উইকেটে ম্যাচটি জিতে গিয়েছিল পুনে। সেটা ছিল আইপিএলের ম্যাচের শেষ ওভারে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের নজির।
আরও পড়ুন: শেষ পাতে রাহুল-রশিদ বিস্ফোরণ, উমরানের লড়াই ব্যর্থ করে জিতল গুজরাট
আরও পড়ুন: ১ দিনেই RR-কে সিংহাসনচ্যুত করে শীর্ষে GT, বড় ধাক্কা খেল SRH
বল হাতে এদিন কিছু করে উঠতে পারেননি রশিদ খান। ৪ ওভার বল করে ৪৫ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি তিনি। তবে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে সেই রাগটা পুষিয়ে নিল আফগান তারকা। ১১ বলে অপরাজিত ৩১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে গুজরাটকে সাফল্য এনে দিলেন তিনি। তাঁর এই ইনিংসে রয়েছে ৪টি ছয়। রাহুল তেওয়াটিয়া আবার পাঁচে ব্যাট করতে নেমে ২১ বলে অপরাজিত ৪০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। এই ইনিংসে দু'টি ছক্কা এবং চারটি বাউন্ডারি রয়েছে।
আসলে হায়দরাবাদের করা ১৯৫ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা ৩৮ বলে ৬৮ রানের ঝড়ো একটি ইনিংস খেলেন। ১টি ওভার বাউন্ডারি এবং ১১টি বাউন্ডারির হাত ধরে। তবে মাঝে উমরান মালিকের দাপটে কিছুটা গুটিয়েই গিয়েছিল গুজরাট। ৫ উইকেট নিয়ে তখন ওয়াংখেড়েতে আগুন ঝড়াচ্ছেন উমরান। ম্যাচ কার্যত হাত থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল গুজরাটের। ১৬ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪০ রান ছিল গুজরাটের। সেখান থেকে রশিদ এবং রাহুলের লড়াই পুরো অঙ্কের হিসেবটাই এলোমেলো করে দেন। ম্যাচের সেরা হওয়ার পরও হয়তো তাই হারের যন্ত্রণাটা বড় বেশি খচখচ করবে উমরানের মনে।
এ যেন একেবারে মধুর প্রতিশোধ নেয় গুজরাট। প্রথম পর্বে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছেই একমাত্র ম্যাচে হারতে হয়েছিল গুজরাট টাইটানসকে। আর বুধবার তারই মধুর বদলা নিল হার্দিক পাণ্ডিয়ার টিম। লোমহর্ষক উত্তেজনার ম্যাচে ৫ উইকেটে হায়দরাবাদকে হারিয়ে ফের লিগ টেবলের শীর্ষে উঠে এল গুজরাট। ৮ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতেই জিতলেন হার্দিকরা। একেবারে একে থাকার যোগ্য দলের মতোই পারফরম্যান্স করে চলেছে গুজরাট টাইটানস।
এ দিন টসে জিতে ফিল্ডিং নেয় গুজরাট টাইটানস। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হায়দরাবাদ শুরুর দিকে ২ উইকেট হারালেও অভিষেক শর্মা (৪২ বলে ৬৫) এবং এডেন মার্করাম (৪০ বলে ৫৬) হায়দরাবাদের হাল ধরেন। এর পর সাতে নেমে শশাঙ্ক সিং ৬ বলে ২৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে হায়দরাবাদকে পৌঁছে দেন ১৯৫ রানে। ৬ উইকেট তারা এই রান করেন। শামি ৩ উইকেট নিলেও বড় রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় হায়দরাবাদ। শামি ছাড়াও ১টি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেফ এবং যশ দয়াল। তবে ১৯৫ করেও রশিদের দাপটে শেষ রক্ষা করতে পারল না হায়দরাবাদ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।