অভিষেক ম্যাচেই দুরন্ত হাফ সেঞ্চুরি। তাও ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে। আইপিএলে নয়া নজিরও গড়ে ফেলেছেন তরুণ আয়ুশ বাদোনি । আইপিএলের ইতিহাসে তিনিই হলেন প্রথম প্লেয়ার, যিনি অভিষেক ম্যাচে ছ'নম্বর বা তার নীচে ব্যাট করতে নেমে ৫০ বা তার বেশি রান করলেন। আর ২২ বছরের তরুণে একেবারে মুগ্ধ এলএসজি অধিনায়ক কেএল রাহুল।
পাওয়ারপ্লে ওভারে লখনউ সুপার জায়ান্টসরা মাত্র ২৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। সেখান থেকে দীপক হুডা এবং আয়ুশ বাদোনির ব্য়াট ভর করে নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৮ করে লখনউ। অভিষেক ম্যাচে বলিষ্ঠ ব্যাটিং করে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়েন আয়ুশ। আর ২২ বছরের তরুণের দুরন্ত ব্যাটিং দেখে তাঁকে ‘বেবি এবি’ আখ্যা দিয়েছেন স্বয়ং রাহুলই।
ম্যাচের পর তিনি বলেছেন, ‘ও বেবি এবি। প্রথম দিন থেকেই ও অসাধারণ। একটি ছোট ছেলে, অথচ দুরন্ত পাঞ্চ মেরেছে। এবং ৩৬০ ডিগ্রী খেলেছে। ও সুযোগটি পেয়ে, সেটা অসাধারণ ভাবে কাজে লাগিয়েছে, যা দেখে আমি খুশি। আমাদের ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর, সেই চাপের মধ্যে ও হাল ছাড়েনি। বরং সেই চাপ নিয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছে। এবং আশা করি ও এমনটাই খেলে যাবে।’
সোমবার টসে জিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন গুজরাট টাইটানসের অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া। শুরুতেই ব্যাট করতে নেমে বড় ধাক্কা খান লখনউ অধিনায়ক। ম্যাচের প্রথম বলেই শূন্য করে আউট হন কেএল রাহুল। তাঁকে ফেরান জাতীয় দলে তাঁরই সতীর্থ মহম্মদ শামি।
মহম্মদ শামি এ দিন শুরু থেকেই একেবারে আগুনে মেজাজে ধরা দিয়েছেন। ৫ ওভারের মধ্যে এ দিন গুজরাটের ৪ উইকেট পড়ে যায়। তার মধ্যে মহম্মদ শামি একাই নেন ৩ উইকেট। বাকি ১টি উইকেট নিয়েছেন বরুণ অ্যারন। রাহুল ছাড়াও কুইন্ট ডি'কক-কে (৯ বলে ৭ রান) বোল্ড করেন শামি। এর পর শামির বলেই ৫ বলে ৬ করে বোল্ড হন মণীশ পাণ্ডেও। এভিন লুইস ৯ বলে ১০ রান করে বরুণ অ্যারনের বলে শুভমন গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। পাওয়ার প্লে-তেই ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে যায় লখনউ।
সেই কঠিন পরিস্থিতিতে লখনউ জায়ান্টসের হাল ধরেন দীপক হুডা এবং ২২ বছরের তরুণ বাদোনি। আয়ুশ বাদোনির এই ম্যাচেই অভিষেক হয়। এই জুটি পঞ্চম উইকেটে ৮৭ রান যোগ করেন। দীপক হুডা ৪১ বলে ৫৫ করে আউট হন। তাঁকে ফেরান রশিদ খান। বাদোনিকে ফেরান বরুণ অ্যারন। তিনি আবার ৪১ বলে ৫৪ করেছেন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে চারটি চার এবং তিনটি ছয়। এই দুই ক্রিকেটারের দুরন্ত পারফরম্যান্স এবং সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার ১৩ বলে ২১ রানের সৌজন্য লখনউ সুপারজায়ান্টস ১৫০ রানের গণ্ডি টপকায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় গুজরাট টাইটানস। মাত্র ৩ বল খেলে শূন্যতে আউট হন শুভমন গিল। তাঁকে ফেরান দুষমন্ত চামেরা। এর পরেই চামেরার বলে মাত্র ৬ রান করে আউট হন বিজয় শঙ্করও। দলের ১৫ রানের মাথায় ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় গুজরাট। কিন্তু এর পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ম্যাথু ওয়েড এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া। ২৮ বলে ৩৩ রান করে ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার বলে মণিশ পাণ্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হার্দিক। হার্দিক আউট হওয়ার পরেই ২০ বলে ৩০ করে দীপক হুডার বলে বোল্ড হন ম্যাথু ওয়েডও।
পঞ্চম উইকেটে হাল ধরেছিলেন ডেভিড মিলার এবং রাহুল তেওয়াটিয়া। ২১ বলে ৩০ রান করে আবেশ খানের বলে কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মিলার। কিন্তু হাল ধরে থাকেন তেওয়াটিয়া। ২৪ বলে অপরাজিত ৪০ রান করে দলকে জয় এনে দেন। ৭ বলে ১৫ রান করে অভিনব মনোহর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন। ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬১ রান করে গুজরাট। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় হার্দিকের টিম।
তবে লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচ হারলেও, তাদের তরুণ প্রতিভা আয়ুশের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ রাহুলের পাশাপাশি ভারতের ক্রিকেট মহলও।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।