সনাতন ধর্মে অমাবস্যার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সোমবারের দিনে অমাবস্যা হলে, তাকে সোমবতী অমাবস্য বলা হয়। এ বছর ১২ এপ্রিল সোমবতী অমাবস্যা। পুরাণ অনুযায়ী এদিন দান-পুণ্য ও দীপদান করা শুভ। জীবনে সুখ-শান্তির জন্য এদিন কী করবেন, জেনে নিন—
গঙ্গাজলে স্নান করুন:
এদিন গঙ্গা বা অন্য কোনও পবিত্র নদীতে স্নান করা উচিত। সূর্যদয়ের পূর্বেই এদিন স্নান সেড়ে নেওয়া উচিত। মনে করা হয়, সোমবতী অমাবস্যার দিনে বিধিবদ্ধ স্নান করার ফলে সর্বদা বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভ করা যায়। নদীতে স্নান করতে যেতে না-পারলে, স্নানের জলে স্বল্প গঙ্গাজল মিশিয়ে স্নান করুন। বিধি মেনে স্নান ও তর্পণ করলে পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি লাভ করে।
সূর্যকে অর্ঘ্য দিন:
পদ্মপুরাণ অনুযায়ী পূজা, তপস্যা, যজ্ঞ ইত্যাদিও হরিকে ততটা প্রসন্ন করতে পারে না, যতটা সকালে স্নান করার পর সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়ার ফলে বিষ্ণু প্রসন্ন হন। তাই পূর্ব জন্ম ও ইহজন্মের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি ও সূর্যের আশীর্বাদ লাভের জন্য নিয়মিত সূর্য মন্ত্র উচ্চারণ করে সূর্যকে অর্ঘ্য দেওয়া উচিত।
অশ্বত্থ গাছে পিতৃপুরুষদের বাস:
মনে করা হয় অমাবস্যার দিনে অশ্বত্থ গাছে পূর্বপুরুষদের বাস হয়। এদিন অশ্বত্থ ও বিষ্ণুর পুজো করলে সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়। লক্ষ্মীর আশীর্বাদ লাভের জন্য মিষ্টি জলে দুধ মিশিয়ে অর্পণ করুন। কারণ এদিন অশ্বত্থ গাছে লক্ষ্মীও বাস করেন। পুজোর পর অশ্বত্থ ও শক্তির পরিক্রমা করে জীবনের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা উচিত। এর ফলে পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকে ও সন্তান সুস্থ থাকে।
দান করার ফলে পুণ্য লাভ হয়:
এদিন অন্ন, দুধ, ফল, চাল, তিল ও আমলকী দান করলে পুণ্য লাভ করা যায়। দরিদ্র, সাধু, মহাত্মা বা ব্রাহ্মণদের ভোজন করানো উচিত। স্নান-দান, ইত্যাদি ছাড়া পূর্বপুরুষদের তর্পণ করলে পরিবারে পিতৃপুরুষদের আশীর্বাদ থাকে।
তুলসী পুজো করবে দারিদ্র্য দূর:
সোমবতী অমাবস্যার দিনে তুলসী পুজো করে ১০৮ বার পরিক্রমা করলে বাড়ির দারিদ্র্য দূর হয়। পরিবারে সমৃদ্ধি আসে ও আর্থিক পরিস্থিতি মজবুত হয়।
ভুলেও করবেন না যে কাজ:
- এদিন তামসিক ভোজন করবেন না।
- ঝগড়া, লড়াই, বিবাদ এড়িয়ে চলুন। মিথ্যে ও কটূ কথা বলবেন না। এদিন পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের ভুলেও অপমান করতে নেই।
- এদিন শরীরে তেল লাগাতে নেই।
- স্ত্রী-পুরুষরা ব্রহ্মচর্য পালন করুন।
- স্নানের সময় ও স্নানের আগে কোনও কথা বলবেন না। সম্ভব হলে, কিছুক্ষণের জন্য মৌনব্রত পালন করুন।