অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে কার্যত জোর করে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার রাতে বোলপুর সিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর এই স্বীকারোক্তির পরদিন সকালে প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিয়ান হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ও অ্যাসিস্টান্ট সুপার এক সুরে জানালেন, শনিবার থেকে ছুটিতে রয়েছেন সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। বুধবার পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন তিনি। অর্থাৎ ছুটিতে থাকাকালীনই চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে ফোন করে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বাবু। যার প্রশাসনিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সিয়ান হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সব্যসাচী ঘোষ বুধবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সুপার স্যার ৬ – ১০ তারিখ ছুটিতে রয়েছেন। আমি কোনও চিকিৎসককে হাসপাতালের বাইরে কোথাও পাঠাইনি। কে পাঠিয়েছে বলতেও পারব না। সরকারি চিকিৎসকের হাসপাতালের বাইরে গিয়ে এভাবে চিকিৎসা করা বৈধ কি না তাও জানা নেই। এটা সুপার স্যারই বলতে পারবেন।
জখম চিনা জওয়ানের প্রাণ বাঁচানো ভারতীয় মেডিকও শহিদ হয়েছিলেন গালওয়ান সংঘর্ষে!
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দীপ্তেন্দু দত্ত বলেন, ‘সুপার স্যার বুধবার পর্যন্ত ছুটিতে আছেন। আমি কাউকে হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা করতে যেতে নির্দেশ দিইনি। কে নির্দেশ দিয়েছে বলতে পারব না।’
মঙ্গলবার সকাল ১১.৩০ মিনিট নাগাদ অনুব্রতর বাড়িতে যান বোলপুর সিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। বেরিয়ে তিনি জানান, অনুব্রতবাবুর অর্শ পেকে গিয়েছে। যার ফলে যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন। সঙ্গে তাঁর মধুমেহ ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। সব দিক দেখে আমি ওনাকে মানবিক কারণে বেডরেস্টের পরামর্শ দিয়েছি। বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু বলেন, ওপরমহলের নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছি। জেলাশাসকের নির্দেশ ছিল।
‘অনুব্রত বাঁচতে পারবেন না, জেলে পার্থ অপেক্ষায়’, তীব্র কটাক্ষ সুকান্তর
এর পর সন্ধে গড়াতেই ফের সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন চন্দ্রনাথ অধিকারী। তিনি বলেন, তাঁকে ফোন করে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যেতে বলেন বুদ্ধদেববাবু। কিন্তু তিনি রোগীকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। সেকথা না শুনে তাঁকে অনুব্রতর বাড়িতে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমনকী সুপার জানান, অনুব্রতর বাড়িতে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে। হাসপাতালের কোনও প্রেসক্রিপশন সেখানে যাবে না। ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘বোলপুরে থাকি, বাধ্য হয়ে অনুব্রতকে বেড রেস্ট লিখতে হয়েছে।’
গোটা ঘটনায় বোলপুর সিয়ান হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, কার নির্দেশে তিনি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসককে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাঠালেন তা বুদ্ধদেববাবুর কাছে জানতে চাইতেই পারে সিবিআই।