বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক তরুণ সামন্ত
এক বিজেপি নেত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে একাধিকবার পুলিশে নালিশ জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। তাই অবসাদে আত্মঘাতী হন ওই বিজেপি নেত্রী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে সোনামুখী পুরসভা এলাকায়। পদ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। অপমানে সম্মানহানির ভয়ে আত্মঘাতী হলেন সোনামুখী পুরসভার গত নির্বাচনে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী। অভিযোগের তির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক তরুণ সামন্তের বিরুদ্ধে। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের এক জেলার নেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠায় নেতৃত্বরা অস্বস্তিতে পড়েছেন।
এদিকে মৃতা বিজেপি নেত্রী ওই পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই মহিলাকে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক তরুণ সামন্তের বিরুদ্ধে। গত পুরসভা নির্বাচনে ওই মহিলা বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। তখন দলের পর্যবেক্ষক ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক তরুণ সামন্ত। তখনই ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তারপর কালের গতিতে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। ওই মহিলাকে দলের উঁচু পদে বসানোর টোপ দেন তরুণ সামন্ত বলে অভিযোগ। এই টোপ দিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ওই বিজেপি নেতা বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। ওই মহিলার সঙ্গে সহবাস করার সময় গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করে রাখেন তরুণ সামন্ত বলে অভিযোগ। তারপর মাঝেমধ্যেই ওই মহিলাকে তাঁর নগ্ন সহবাসের ছবির ভিডিয়ো দেখিয়ে ধর্ষণ করা হতো। পরে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বিজেপি নেতা তরুণ সামন্ত বলে অভিযোগ। বিষ্ণুপুরে মিটিংয়ের নাম করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ওই বিজেপি নেত্রী তার স্বামীকে বিষয়টি জানালে গত ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ওই বিজেপি নেত্রী সোনামুখী থানা একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন বিজেপি নেতা তরুণ সামন্তের বিরুদ্ধে। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি। এমনকী অভিযুক্ত তরুণ সামন্ত ফোনে ওই বিজেপি নেত্রীকে বারবার কটুক্তি করতে থাকে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক পদে ১১,৭৬৫ নিয়োগ হতে চলেছে, সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায়
এছাড়া বিজেপি নেত্রীকে ফোনে কুৎসিত মন্তব্য করতে থাকেন ওই বিজেপি নেতা বলে অভিযোগ। তার ফলে মনের উপর বিরাট প্রভাব পড়ে ওই বিজেপি নেত্রীর। ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন বিজেপি নেত্রী। আর আত্মহত্যা করেন ওই বিজেপি নেত্রী বলে অভিযোগ। পরে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত বিজেপি নেত্রীর স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী মৃত্যুর আগেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। এবার তার স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সোনামুখী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযুক্ত নেতা ফোনে ওই মহিলাকে উত্যক্ত করতে থাকেন। আর হুমকিও দিতে থাকেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হোক। যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তার সাজা হোক।