ওড়িশার বালাসোরের ২৩ দিন পর বাঁকুড়ার ওন্দায় কার্যত একই কায়দায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটল। ওড়িশার ঘটনায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালককে ক্লিনচিট দেওয়া হলও বাঁকুড়ার দুর্ঘটনার যাবতীয় দায় মালগাড়ির চালকের (যে মালগাড়ির লুপ লাইনে ঢুকে অপর মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা মেরেছে) উপর চাপিয়ে দিল রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য কুমার চৌধুরী দাবি করেছেন, লাল সিগন্যাল উপেক্ষা করেই লুপ লাইনে ঢুকে গিয়েছিলেন মালগাড়ির চালক। একইসুরে আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মণীশ কুমার জানিয়েছেন, ভোরের দিকে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেইসময় চালকের ঝিমুনি আসতে পারে। তাই সিগন্যাল উপেক্ষা করতে পারেন।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, রবিবার ভোরে একটি মালগাড়ির শান্টিং চলছিল। সেইসময় লাল সিগন্যাল উপেক্ষা করে এগিয়ে যান অপর মালগাড়ির চালক। তার জেরে ভোর ৪ টে ৫ মিনিট নাগাদ সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুটি মালগাড়ির আটটির মতো বগি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সকাল ৭ টা ৪৫ মিনিটে আপ মেন লাইন এবং আপ লুপ লাইনে পরিষেবা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ জনসংযোগ আধিকারিক।
একইসুরে ঘটনাস্থলেই আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল ডিআরএম বলেছেন, ‘চালকের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সম্ভবত ওঁনার ঝিমুনি ধরে গিয়েছিল। হোম সিগন্যাল দেখতে পাননি। হোম সিগন্যাল উপেক্ষা করে এগিয়ে যান। লুপ লাইনের জন্য পয়েন্ট সেট করা ছিল। পিছন থেকে শান্টিং হওয়া মালগাড়িতে ধাক্কা মারে অপর মালগাড়ি।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভোর চারটেয় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেইসময় অনেকক্ষেত্রে চোখ লেগে যায়।’
উল্লেখ্য, গত ২ জুন বালাসোরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে কার্যত একই কায়দায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। লুপ লাইনে দাঁড়িয়েছিল মালগাড়ি। পিছন থেকে এসে ধাক্কা মেরেছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছিল করমণ্ডলের একাধিক বগি। কয়েকটি কোচ ডাউন লাইনেও ছিটকে পড়ে গিয়েছিল। সেইসময় ডাউন লাইন দিয়ে একটি এক্সপ্রেস ট্রেন আসছিল। করমণ্ডলের কোচে ধাক্কা মেরে ওই ট্রেনেরও কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছিল। তার জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছিল। মৃত্যু হয় প্রায় ৩০০ জনের। তবে সেক্ষেত্রে করমণ্ডলের চালককে ক্লিনচিট দিয়েছে রেল। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমে গোলমালের জেরে সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছে রেল।