রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না দমদমের সাংসদ সৌগত রায় । বরাহনগরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘শুধু পুলিশের উপর নির্ভর করে থাকলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।’ অর্থাৎ সৌগতর মতে, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গেলে শুধু পুলিশের উপর আস্থা রাখলে চলবে না। কার্যত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সৌগত রায়। ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তাতেই সৌগত রায়কে এই কথা বলতে শোনা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: অভিষেক বলেছিলেন শান্তিপূর্ণ ভোট হবে, কিন্তু হয়নি: সৌগত রায়
বরাহনগরের ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সৌগত রায় বলেন, ‘শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর করে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। তাই রক্ষী বাহিনীকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’ এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীরা তৃণমূল এবং সৌগত রায়কে এনিয়ে আক্রমণ করেছে। এ বিষয়ে সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘পুলিশকে যদি কাজ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, যদি রাজনৈতিক রঙ না দেখে পুলিশকে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ছাড় দেওয়া হয়, যদি প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা নেয়। তাহলে পুলিশ নিশ্চয়ই মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারবে।’ তাঁর মতে, তৃণমূলের নির্দেশ মতোই কাজ করছে পুলিশ। সেখানে পুলিশের স্বাধীনভাবে কাজ করার কোনও জায়গা নেই।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। অভিযোগ ছিল, তৃণমূল পুলিশকে ব্যবহার করছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে পুলিশকে তৃণমূলের গুন্ডা বলেও কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুধু তাই নয়, শাসক দলের অনেক নেতাও পুলিশের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের অশান্তি নিয়ে পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তিনি বলেছিলেন, ‘ভোটের আগেও পরে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে পুলিশ সক্রিয় এবং সতর্ক থাকলে এই ধরনের ঘটনা রোখা যেত, অনেক মৃত্যুর ঘটনা রোখা যেত।’ যদিও বিরোধীরা তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্যকে আইওয়াশ বলেই মন্তব্য করেছিলেন।
তাদের বক্তব্য ছিল, আসলে পুলিশকে বলির পাঁঠা করতে চাইছে তৃণমূল। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ‘পুলিশকে বলির পাঁঠা করতে চাইছে তৃণমূল। পুলিশের ঘাড়ে বন্দুক রেখে লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন পুলিশ মন্ত্রী। বলতে হলে পুলিশকে না বলে তাঁর বিরুদ্ধে বলুন। এটা তৃণমূলের ভেতরের ব্যাপার।’ একই কথা বলেছিলেন সিপিএমে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনিও বলেছিলেন, ‘পুলিশের ঘাড়ে বন্দুক রেখে করে লাভ নেই। সেটা পুলিশকে বুঝতে হবে। আইপিএস অফিসারদের সেটা বুঝতে হবে। ফেঁসে গেলে কেউ কাউকে দেখেনা।’