ভোররাতে কংগ্রেস মুখপাত্র তথা কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতার বড়তলা থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এবার বিস্ফোরক মন্তব্য কুণাল ঘোষের। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নিজের 'ব্যক্তিগত মত' জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, 'কৌস্তুভ অন্যায় করেছে। মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে ওই ধরনের চরম কুৎসা বরদাস্ত করা যায় না। কিন্তু পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার ঠিক হল না।' (আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলন দমাতে তৎপর সরকার, কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষের)
কুণাল ঘোষ লেখেন, 'কৌস্তুভ বাগচীর গ্রেফতারি সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মতামত - কৌস্তুভ অন্যায় করেছে। মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে ওই ধরণের চরম কুৎসা বরদাস্ত করা যায় না। আমাদের ছাত্রযুবরা কৌস্তভের অসভ্যতা বুঝে নিতে পারত। কিন্তু পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার ঠিক হল না। এতে কৌস্তুভ প্রচার পাবে, বিরোধী শক্তির অশুভ আঁতাতের কুৎসিত রাজনীতির হাতিয়ার হবে, একাংশের মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট প্রচারের মুখ হবে, কিছু মানুষের সহানুভূতি পাবে। গ্রেফতারকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবে তারা।'
বিজেপি নেতা তথা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষণের গ্রেফতারির ঘটনার উদাহরণ টেনে কুণাল আরও লেখেন, 'যেদিন পুলিশ সজলের বাড়ির দরজা ভেঙেছিল, আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। পরে প্রমাণিত হয়েছে আমার প্রতিবাদ সঠিক ছিল। লাভ হয়েছিল সজলের। মধ্য কলকাতায় একটি ওয়ার্ড জিতেছিল বিজেপি। সেদিন পুলিশি অভিযানের ধরণ ছিল ভুল। আজও আমি কৌস্তুভের গ্রেফতারের বিরোধিতা করছি। এতে ওর এবং বিরোধীদের রাজনৈতিক লাভ হবে। কৌস্তুভ অন্যায় করেছে। ওর অপরিণত, অসৌজন্যের কথার প্রবণতা আছেই। কিন্তু তার জবাব রাজনৈতিকভাবে আমাদের ছাত্রযুবরা দিতে পারত। পুলিশি অভিযান ঠিক হল না। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সজলের দরজা ভাঙার ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল।'
প্রসঙ্গত, আজ ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর গ্রেফতার করা হয় কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে। ধৃত কৌস্তভের দাবি, সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল। গ্রেফতারির পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে আমাকে এতটা ভয় পাবেন, আমি ভাবিনি। এটা তো আমার নৈতিক জয়।’ সংবাদমাধ্যমের সামনে কৌস্তভ জানান, তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে করা মন্তব্যের কারণে রাজ্যে শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সেই কারণ দেখিয়েই নাকি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ৫০৯, ৩৫৪এ এবং ১২০বি ধারায় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করা হয়।