কলকাতাতে এক বেসরকারি হাসপাতালে টিকা নিতে চরম ভোগন্তির সম্মুখীন হলেন এক পাকিস্তানি মহিলা। জানা গিয়েছে, শাহার কাইজার নামক ওই মহিলা জন্মসূত্রে পাকিস্তানি হলেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গত ৭ বছর ধরে কলকাতার পার্ক সার্কাসে থাকেন। কয়েকদিন আগে কোউইন অ্যাপে স্লট বুক করে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে টিকা নিতে গেলে তাঁকে ফিরে আসতে হয় টিকা না নিয়ে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যভবনের হস্তক্ষেপে টিকা পান শাহার। ঢাকুরিয়ার এক হাসপাতালে গিয়ে টিকা নেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহের শুক্রবার পরিবারের তিনজনের জন্যে টিকা নেওয়ার স্লট বুক করা হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শাহারও যান টিকা নিতে। তাঁর পাসপোর্ট রয়েছে। সেই নথির ভিত্তিতেই তিনি টিকার স্লট বুক করেছিলেন। তবে হাসপাতালে তাঁকে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর জানানো হয়, সরকারের তরফে থেকে নাকি বারণ করা হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে শাহারের অভিযোগ, থাইল্যান্ড, জাপান, নেপাল, ভুটান, আমেরিকা সহ অনেক দেশের নাগরিকরা পাসপোর্ট দেখিয়ে টিকা পেয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, পাকিস্তানি বলেই কি তাঁর সঙ্গে এহেন আচরণ?
শাহার জানান, তিনি স্পুটনিক ভি টিকা নিতে গিয়েছিলেন। কোউইন অ্যাপে স্লট বুকিং দেখে তাঁদের থেকে টাকা জমা নেওয়া হয়। এরপর হাসপাতালের এক কর্মী তাঁকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টাবসে থাকতে হয় শাহারকে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যভবনের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে দাবি করে, সরকারের নির্দেশে দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোনও দেশের পাসপোর্ট নথি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে না।
এরপর স্বাস্থ্যভবনে ফোন করেন। সেখান থেকে জানানো হয় বেসরকারি হাসপাতালে টাকা দিয়ে টিকা নিতে কোনও সমস্যা নেই। এরপর রবিবার কো-উইন অ্যাপে আবার নাম নথিভুক্ত করেন শাহার। বুধবার দুপুরে তিনি ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন। এদিকে বাইপাসের ধারে যে হাসপাতালে গিয়ে প্রথমে শাহার টিকা পাননি, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলে, 'আমাদের তো টিকা দিতে অসুবিধা নেই। কিন্তু সরকার ভারতীয় নাগরিক ছাড়া টিকা দিতে বারণ করেছিল। তাই সরকারি নিয়ম মেনেই আমরা টিকা দেইনি।'