যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুতে গ্রেফতার আরও এক প্রাক্তনী। ধৃতের নাম হল জয়দীপ ঘোষ। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরেই পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। মূলত সেই ঘটনায় জয়দীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর ফলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট গ্রেফতারের সংখ্যা হল ১৩ জন। জানা গিয়েছে, জয়দীপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগের প্রাক্তনী। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার ৩ জনের পুলিশ হেফাজত, ধৃতদের ব্যর্থ অভিনেতা বললেন সরকারি আইনজীবী
কে এই জয়দীপ?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগ থেকে ২০২১ সালে পাশ করে জয়দীপ। সে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা। তবে সে হস্টেলে থাকত না বিক্রমগড়ে থাকত। শনিবার দফায় দফায় জয়দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তদন্তকারীদের সন্দেহ শুধু পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় নয়, পরবর্তী ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল জয়দীপ। উল্লেখ্য, এদিন যাদবপুর থানার পুলিশ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ। করে নিরাপত্তারক্ষীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কিছুদিন আগে নিরাপত্তাররক্ষী বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন, যে গেটের তালা বন্ধ করার জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এমনকী সুপার তালা লাগিয়ে দিতে বলেছিলেন বলেও তিনি দাবি করেছিলেন। এরফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের গেট বন্ধ থাকায় পুলিশ ঢুকতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ বাইরে ধরে অপেক্ষা করতে হয় পুলিশকে। পরে একটি হলুদ ট্যাক্সি হস্টেল থেকে বেরোলে তার পিছু নেয় পুলিশ। সেই ট্যাক্সি কে পি সি হাসপাতাল অবধি যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ ছাত্র মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পারে।
এই মুহূর্তে জয়দীপকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। তার ভূমিকা কী ছিল তা জানতে চাইছে পুলিশ। বিক্রমগড়ে থাকলেও সে হস্টেলে ওইদিন কী করছিল? কেনই বা পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিল? এই সমস্ত প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এই অবস্থায় তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। আজ রবিবার আদালতে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যায় বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। নগ্ন এবং অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ যাদবপুর হস্টেলে গেলে সেখানে হোস্টেলের মেন গেটের তালা বন্ধ থাকার ফলে সেই সময় পুলিশ ভিতরে ঢুকতে পারেনি। প্রথমে পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল ওই সময়ের মধ্যে প্রমাণ লোপাটে চেষ্টা করা হয়েছিল। এই ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ প্রথমে এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করে। এরপর একের পর এক ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।