বিরাট কোহলির জন্মদিনে নেটিজেনদের একাংশের তোপের মুখে পড়ল চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে)। ২০১২ সালের আইপিএলে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে বিরাটের সেই ২৮ রানের ওভার নিয়ে সিএসকের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার এস বদ্রীনাথ এবং অ্যালবি মর্কেল আলোচনা করায় নেটিজেনদের একাংশ রীতিমতো চটে গিয়েছেন। বিরাটের জন্মদিনে কেন সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। পালটা বদ্রীনাথ এবং মর্কেলের ‘ব্যর্থতা’-র পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিরাট ভক্তদের একাংশ তো আবার বলতে শুরু করেছেন যে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিরাট যে ইনিংসটা খেলেছিলেন, সেটা বদ্রীনাথ এবং মর্কেলের পুরো কেরিয়ারের থেকে ঢের ভালো।
ঠিক কী বলেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাইয়ের দুই প্রাক্তনী বদ্রীনাথ এবং মর্কেল? রবিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ সিএসকের তরফে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়। যে ভিডিয়োয় ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘অ্যালবিও একমত হয়েছেন। কোহলিকে বোলিং দেওয়া হোক। এস বদ্রীনাথের সঙ্গে অ্যালবি মর্কেলের আলোচনার ভিডিয়ো দেখুন।’
ওই ভিডিয়ো বদ্রীনাথকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘তোমায় শেষ একটা প্রশ্ন করছি। (এবারের বিশ্বকাপে ভারতের) শেষ ম্যাচটায় (শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে) আমি মাঠে হাজির ছিলাম। গ্যালারি থেকে আওয়াজ উঠছিল যে বিরাট কোহলিকে বল দাও, বিরাট কোহলিকে বল দাও। আরসিবির বিরুদ্ধে চিপকে যে ওভারটা হয়েছিল, সেটা এখনও ভুলতে পারি না আমি (হাসি)। তোমার কি মনে হয় যে বিরাটের বল করা উচিত?’
বদ্রীনাথের প্রশ্নের উত্তরে দক্ষিণ আফ্রিকা তথা চেন্নাইয়ের প্রাক্তন তারকা মর্কেল বলেন, ‘যদি বিরাট বল করতে চায়, তাহলে ওকে বল করতে দেওয়া উচিত (ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার)।’ সেইসঙ্গে ওই ভিডিয়োয় মর্কেলকে বলতে শোনা যায়, ‘ওর (বিরাট) বল করতে আসা উচিত। ওর নিজের উপর বিশ্বাস রাখা উচিত।’
বদ্রীনাথ এবং মর্কেল বিরাটের যে ওভারের কথা বলেছেন, সেই ওভারটা ২০১২ সালের আইপিএলে চেন্নাই এবং ব্যাঙ্গালোরের ম্যাচে হয়েছিল। চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে আট উইকেটে ২০৫ রান তুলেছিল ব্যাঙ্গালোর। জবাবে ১৮ ওভারের শেষে চেন্নাইয়ের স্কোর ছিল চার উইকেটে ১৬৩ রান। অর্থাৎ জয়ের জন্য মাত্র দু'ওভারে ৫৩ রান দরকার ছিল। সেই পরিস্থিতিতে ১৯ তম ওভারে বিরাট বল করতে এসেছিলেন। ওই ওভারে ২৮ রান তুলেছিলেন মর্কেল।
বিরাটের প্রথম বলটা চার মেরেছিলেন চেন্নাইয়ের তারকা। দ্বিতীয় বলটা মাঠের বাইরে উড়ে গিয়েছিল। ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। তৃতীয় বলটা চার হয়েছিল। চতুর্থ বলে ফের ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পঞ্চম বলে দু'রান নিয়েছিলেন। আর শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। আর সেই ওভারের সুবাদে শেষ ওভারে মাত্র ১৫ রান দরকার ছিল চেন্নাইয়ের। আর সেটা তাড়া করে জিতে গিয়েছিল চেন্নাই। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৮ ওভার ওই ম্যাচে এগিয়েছিল আরসিবি। দু'ওভারে ম্যাচ বের করে নিয়েছিল সিএসকে। আর ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল বিরাটের ওভার।
আরও পড়ুন: একটি বল না করেও ১ উইকেট নিয়েছিলেন, T20-তে এমনই আজব নজির রয়েছে কোহলির নামে
আর বিরাটের জন্মদিনে সেই পুরনো ওভারের ক্ষত নিয়ে ‘হাসাহাসি’ করায় চটে গিয়েছেন কোহলি ভক্তদের একাংশ। এক নেটিজেন বলেন, 'উনি কি ভুলে গিয়েছেন যে ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কী হয়েছিল, সেটা কি ভুলে গিয়েছেন উনি (মর্কেল)?' উল্লেখ্য, কার্যত একা হাতে প্রোটিয়াদের হারিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট। ফাইনালে উঠে গিয়েছিল ভারত।
অপর এক নেটিজন বলেন, 'অ্যালবি বলছেন যে সিএসককে কেন দু'বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল? কোনও কারণ। বদ্রীনাথ বলছেন যে আমরা ম্যাচ ফিক্সিংয়ে খুব ভালো ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ধরা পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা ফের সেটা শুরু করেছি এবং আইপিএলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছি।' অপর এক নেটিজেন দাবি করেন যে চেন্নাইয়ের ক্ষমা চাওয়া উচিত।