রবিবার আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আরও এক বার হৃদয় ভেঙেছে ১৪০ কোটির ভারতের। এবার ওডিাই বিশ্বকাপের সেমিতে রোহিত শর্মাদের হারটা যেন হজম করতে পারছে না ভারতের ৮-৮০। চতুর্থ উইকেটে ট্র্যাভিস হেড এবং মার্নাস ল্যাবুশেন জুটি ভারতের সব স্বপ্ন ভেঙে দিল। তবে অজি ইনিংসের একটা সময় কিন্তু দুই দলই কিছুটা একই রকম পরিস্থিতি খুঁজে পেয়েছিল। ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া তাদের ইনিংসে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে বসেছিল। যদিও রোহিত শর্মার আক্রমণাত্মক ৪৭ রানের সুবাদে টিম ইন্ডিয়া কিছুটা ভালো অবস্থানে ছিল। তবে তিন উইকেট হারানোর পর ভারত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বরং আরও চাপে পড়েছে। কিন্তু অজিরা সেই জায়গা থেকে ঘুরে ম্যাচ বের করে নিয়েছে।
কেএল রাহুল এবং বিরাট কোহলি মিলে যে জুটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন, সেটাই করে দেখিয়েছেন হেড এবং ল্যাবুশেন। এবং এই পার্থক্যটাই ফাইনালে ভারতকে লড়াই থেকে ছিটকে দিয়েছে। ৪.২ ওভারে শুভমন গিল আউট হন। পাওয়ারপ্লে-র শেষ ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিতে রোহিতকে ফেরান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১১তম ওভারে আউট হন শ্রেয়স আইয়ার। ৮১ রানের মধ্যে ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে বসে থাকে। রাহুল এবং কোহলি তার পরে হাল ধরার চেষ্টা করলেও সফল হননি। তাঁরা জুটিতে মাত্র ৬৭ রানই যোগ করতে পারেন। ভারতের ইনিংস মাত্র ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চোকার্স হয়েই থাকল ভারত, ২০ বছর আগের স্মৃতি ফিরল, রেকর্ড ষষ্ঠ বার চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
২৪১ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শুরুটা বিস্ফোরক করেছিল। কিন্তু তারা মাত্র ৪৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। জসপ্রীত বুমরাহ ২টি এবং মহম্মদ শামি ১ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু এর পর চতুর্থ উইকেটে ১৯২ রানের পার্টনারশিপ করে ভারতের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নেন হেড এবং ল্যাবুশেন মিলে। হেড ১২০ বলে ১৩৭ রান করেন। ল্যাবুশেন অপরাজিত থাকেন ১১০ বলে ৫৮ করে।
ম্যাচের পর রোহিত ব্যাখ্যা করেন, অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ উইকেটে পার্টনারশিপই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়। তিনি প্রকাশ করেছেন যে, কোহলি এবং রাহুলের পার্টনারশিপ যদি আরও একটু ভালো হত, এবং ভারতের রান ২৭০-২৮০-এর কাছাকাছি গেলে হয়তো লড়াইটা অন্য রকম হতে পারত। কিন্তু সেই প্রত্যাশা ভারতের পূরণ হয়নি।
আরও পড়ুন: শ্মশানের স্তব্ধতা ভারতীয় শিবির ঘিরে, বিপর্যস্ত দলকে চাঙ্গা করতে পৌঁছে গেল মোদীর বার্তা
রোহিতের দাবি, ‘ফাইনালে আমরা মোটেও ভালো খেলতে পারিনি। তবে দলের জন্য গর্বিত। এটা হওয়ার কথা ছিল না। সত্যি বলতে, ২০-৩০ রান বেশি হলে ভালো হতো। ২৫-৩০ ওভার নাগাদ যখন কেএল এবং বিরাট ব্যাটিং করছিল, তখন ওদের থেকে বড় পার্টনারশিপ আশা করেছিলাম। এবং ওদের বলা হয়েছিল, যতক্ষণ সম্ভব ব্যাট করে যেতে। আমরা তখন ২৭০-২৮০ রানের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তার পর আমরা একের পর এক উইকেট হারাতে থাকি। বড় পার্টনারশিপ আর হয়নি। তবে অস্ট্রেলিয়া ঠিক সেটাই করেছিল, তারা তিন উইকেট হারানোর পরেও একটা বড় পার্টনারশিপ গড়েছিল। আমরা শুরুর দিকে উইকেট তুলে নিয়েছিলাম। কিন্তু কৃতিত্ব দেব ট্র্যাভিস হেড এবং মার্নাসকে। ওরা হাত থেকে খেলাটা বের করে নেয়। ফ্লাডলাইডের আলোতেও ব্যাট করা সম্ভবত সহজ হয়ে গিয়েছিল। তবে কোনও অজুহাত দিতে চাই না। আমরা যথেষ্ট ভালো ব্যাটিং করিনি।’