বিজেপির দেখানো পথেই হাঁটতে শুরু করেছে কংগ্রেস। বিজেপি সব ইস্যুতেই ছুটে আসে কলকাতা হাইকোর্টে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই সেই পথ ধরেছে কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হবে বলে কংগ্রেস মামলা করেছিল। তাতে সাফল্যও মেলে। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই করাতে হবে। এই রায়ের পর অক্সিজেন পেয়ে কংগ্রেস চোপড়ার ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়ল। আজ, শুক্রবার কংগ্রেসের আইনজীবী–নেতা কৌস্তভ বাগচী কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, চোপড়ার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় অনেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। তাই মনোনয়নের দিন বাড়ানো হোক। এই মামলার শুনানি সোমবার হতে পারে বলে খবর।
আইনজীবী এবং প্রধান বিচারপতি কী বললেন? চোপড়ার ঘটনাকে সামনে রেখে কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী মনোনয়ন পর্বের সময় বাড়ানোর চেষ্টা করেন। আদালতে তিনি জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মামলা এখন শুনানির তালিকায় রয়েছে। ওই মামলার সঙ্গে এবার শোনা হোক মনোনয়ন পর্বের কথা। আর এই সময়সীমা বাড়ানো না হলে অনেকে মনোনয়নই জমা দিতে পারবেন না। তখন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘আপনাদের এই অভিযোগ আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে জানান। তার পর আমরা বিষয়টি দেখব। শুনানি নিয়ে বিবেচনা করে দেখছি।’ সুতরাং কংগ্রেসের এই ছক কাজে লাগল না বলেই মনে করা হচ্ছে।
চোপড়ায় ঠিক কী ঘটেছিল? গতকাল বৃহস্পতিবার চোপড়ায় বিডিও অফিসে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া হচ্ছিল। তখন গুলি চলে এবং তার জেরে একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। আর গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনজন। এই মিছিলটি ছিল বাম–কংগ্রেস প্রার্থীদের। তাঁদেরই একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ফলে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। এই ইস্যুটিকে সামনে রেখে আজ কলকাতা হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়েন কংগ্রেসের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। আর মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানান। যা এখন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দিকে বল ঠেলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আর কী জানা যাচ্ছে? যদিও গতকাল ডায়মন্ডহারবারে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চোপড়া এবং ভাঙড়ের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চোপড়া আর ভাঙড়ে দুটি ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই ঘটনার সঙ্গে দল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। যারা এই কাজ করেছে, তাদের আমরা টিকিট দিইনি। পুলিশকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ করতে। কোনও অপরাধী যেন ছাড়া না পায়। হিংসার রাজনীতি একটা নতুন দল করছে ভাঙড়ে। অন্য জায়গায় করছে অন্যজন।’ অর্থাৎ তিনি আইএসএফ এবং বিজেপির উপর দায় চাপিয়েছেন। আর তারপরই আদালতে হাজির কংগ্রেস।