লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাটে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নামই হল জগন্নাথ সরকার। এর মধ্যে একজন বিজেপির প্রার্থী আর অন্যজন নির্দল থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই নানা ধরনের অভিযোগ তুলে আসছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার জগন্নাথের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন নির্দল প্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীর ভয়ে তিনি ঘর ছাড়া রয়েছেন। এমনকী বিজেপি প্রার্থী হিন্দুত্বের কথা বলে হিন্দুদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলেও দাবি করেছেন নির্দল প্রার্থী। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে রানাঘাট কেন্দ্রে।
আরও পড়ুন: জগন্নাথের প্রচারে বাধা, বিজেপি কর্মীদের মারধর, গলার চেন ছিনতাইয়ের অভিযোগ
নির্দল প্রার্থী জগন্নাথ সরকার খুবই দরিদ্র পরিবারের। তিনি একটি সবজির দোকানে কাজ করেন। এই প্রথমবার নির্বাচনের ময়দানে নেমেছেন। শান্তিপুর ব্লকের বাগআঁচড়া পঞ্চায়েতের ঢাকাপাড়ার বাসিন্দা জগন্নাথ সরকার। অন্যদিকে, রানাঘাটের বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারও শান্তিপুর ব্লকেরই বাসিন্দা। তাঁর বাড়ি আড়বান্দী ২ পঞ্চায়েতের আরপাড়ায়।
নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর পরেই একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সমর্থন করেছে জগন্নাথকে। সেই সমর্থন জানিয়ে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা কয়েকদিন আগে একটি এক্স পোস্ট করেছিল। ইতিমধ্যেই রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন নির্দল প্রার্থী।
কিন্তু অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই বিজেপির প্রার্থী তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। তারফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে।এখন তিনি গোপন আস্তানায় রয়েছেন। তাঁর হয়ে ভোট প্রচারের কাজ চালাচ্ছে সংগঠনের লোকজন। নির্দল প্রার্থী জানিয়েছেন, অন্য কোনও দল নয়, বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তিনি দাবি করেছেন, সংগঠনের সঙ্গে ২০ বছর বেশি সময় ধরে তিনি যুক্ত রয়েছেন।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। উলটে তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আসলে একই নামের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের বিভ্রান্ত সহজ নয়।
অন্যদিকে, যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী দাবি করেছেন, নির্বাচনে যেকোনও ব্যক্তি লড়তে পারেন। এটা সাংবিধানিক অধিকার। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ২০১৯ সালে জগন্নাথ সরকার জয়ী হয়েছিলেন ঠিকই তবে মানুষ তাঁকে দেখে ভোট দেয়নি। তবে এবার জগন্নাথ সরকারের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বলে দাবি করেছেন মুকুটমণি অধিকারী।