কয়েক মাস আগেই ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি ভাঙিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার। এরপর থেকেই দল ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছেন শরদ পাওয়ার। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে যে দল নিজে হাতে গড়েছিলেন, সেই দলের মোহ অবশ্য ত্যাগ করতে হচ্ছে শরদকে। এই আবহে আগেই শরদ পাওয়ারের গোষ্ঠীকে নয়া নাম দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন - এনসিপি (শরৎচন্দ্র পাওয়ার)। আর এবার শরদের গোষ্ঠীকে নয়া নির্বাচনী প্রতীক দিল নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছেন শরদের দলের নয়া নির্বাচনী প্রতীক হতে চলেছে 'শিঙা (তুরহা) হাতে এক ব্যক্তি'।
মারাঠা সংস্কৃতিতে তুরহা নামক এই শিঙা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই আবহে দলের নয়া নির্বাচনী প্রীক প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় শরদ পাওয়ারের গোষ্ঠীর তরফ থেকে লেখা হয়, 'এককালে দিল্লির মসনদের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজের জমি রক্ষা করা ছত্রপতি শিবাজির বিক্রমের প্রতীক এই তুতারি (শিঙাবাদক)। আমাদের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে সেই তুতারিকে পাওয়া এক গর্বের বিষয়। শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বে আমাদের এই তুতারি এখন দিল্লির মসনদ নাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত।'
উল্লেখ্য, এর আগে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলেছিল। এই আবহে কয়েক সপ্তাহ আগেই এই নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেয় নির্বাচন কমিশন। ভাইপোর অজিত পাওয়ারের গোষ্ঠীর পক্ষেই যায় কমিশনের রায়। এনসিপির নাম ও প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় শরদের ভাইপো অজিতকে। অবশ্য এই দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শরদই। অবশ্য ভাইপোর হাতে দলের 'পাওয়ার' তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এনসিপির সংবিধান খতিয়ে দেখা হয়। সংগঠন এবং আইনসভায় এনসিপির কাদের হাতে বেশি সংখ্যা আছে, সেটাও পরীক্ষা করা হয়। সেইসবের ভিত্তিতেই অজিতের গোষ্ঠীকে এনসিপির প্রকৃত ‘মালিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন। এহেন পরিস্থিতিতে শরদের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীকে দলের নয়া নাম দেওয়া হয় এনসিপি (শরৎচন্দ্র পাওয়ার)।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অধিকাংশ এনসিপি বিধায়কের সমর্থন নিয়ে কাকা শরদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন অজিত। দলবল নিয়ে তিনি যোগ দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি এবং শিবসেনার সরকারে। যে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হলেন একনাথ শিন্ডে। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর গোষ্ঠীকেই প্রকৃত এনসিপি হিসেবে দাবি করতে থাকেন অজিত। পালটা শরদরাও দাবি করেন যে তাঁদের গোষ্ঠীই হল এনসিপি। ছ'মাসের বেশি সময় ধরে ১০টির বেশি শুনানির পরে অজিতদের পক্ষে রায় দেয় কমিশন। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের জুনে এনসিপি তৈরি করা হয়েছিল। দল তৈরি করেছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের তিনজন প্রাক্তন সদস্য - শরদ পাওয়ার, পি সাংমা এবং তারিক আনোয়ার। সেই দলের নির্বাচনী প্রতীক অ্যানালগ টেবিল ঘড়ি। এখন সেই প্রতীক অবশ্য ব্যবহার করতে পারবেন অজিত পাওয়ারের গোষ্ঠী। আর শরদের বরাতে 'শিঙাবাদক'।