কয়েকদিন আগেই পঞ্জাবের ভাটিন্ডায় সেনা ছাউনিতে ঘুমন্ত অবস্থায় চার সেনা জওয়ানকে গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দিয়ে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি হামলার যোগ নেই বলে আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। সেই ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ছিলেন মোহন দেসাই নামক এক সেনা জওয়ান। গতকাল সেই সেনা জওয়ানকেই চার সেনার খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এরপর আজ এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে পঞ্জাব পুলিশ এবং ভারতীয় সেনা এই ঘটনার বিশদ জানাল। আজকে সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ এপ্রিল এই মোহন দেসাই সেনার ইনসাস রাইফেল দিয়ে নিজের চার সহকর্মীকে খুন করেছিলেন। ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জানানো হয়, মোহন দাবি করেছেন যে মৃত চার সেনা জওয়ান তাঁকে হেনস্থা করত।
এদিকে ভাটিন্ডার এসএসপি গুলনীত খুরানা বলেন, 'নিরন্তর জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমরা জানতে পেরেছি যে একটি অস্ত্র চুরি করা হয়েছে এবং সেটি জওয়ানদের হত্যা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। পরে আর্টিলারি ইউনিটের একজন ব্যক্তিকে আটক করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে পুলিশের কাছে একটি ইনসাস রাইফেল চুরি এবং তার চার সহকর্মীকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।' এদিকে এক পৃথক বিবৃতি জারি করে দক্ষিণ-পশ্চিম কমান্ডের তরফে বলা হয়, মোহন দেশাই পুলিশি জেরায় স্বীকার করেন যে তিনি গত ৯ এপ্রিল একটি রাইফেল এবং ম্যাগাজিন চুরি করে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এরপর ১২ এপ্রিল সেন্ট্রি ডিউটির সময় সেই লুকিয়ে রাখা বন্দুকটি নিয়ে এসে ছাউনিতে ঘুমন্ত অবস্থায় চার সেনা জওয়ানকে খুন করে মোহন।
সেনার বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, খুনের পর সেই অস্ত্র নর্দমায় ফেলে দেয় মোহন। সেই নর্দমা থেকে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং বাকি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। সেনার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'ভারতীয় সেনাবাহিনী শৃঙ্খলাভঙ্গের এই ধরনের কার্যকলাপের প্রতি কোনও সহনশীলতা দেখায় না এবং দোষীদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।' প্রসঙ্গত, এর আগে মোহন পুলিশের জেরায় দাবি করেছিলেন তিনি সাদা পোশাক পরা দুই ব্যক্তিকে অস্ত্র হাতে ঢুকতে দেখেছিলেন ছাউনিতে। একজনের হাতে নাকি ছিল ইনসাস রাইফেল এবং অপরজনের হাতে ছিল একটি ধারালো অস্ত্র। তবে ময়না তদন্তের সঙ্গে মোহনের বয়ান মেলেনি। এরপরই সন্দেহ হয় পুলিশের। মোহনকে আরও জেরা করে ধীরে ধীরে আসল সত্যিটা জানা যায়। জানা গিয়েছে, এই চার সেনা জওয়ান ক্রমাগত হেনস্থা করত মোহনকে। তবে কী ধরনের হেনস্থা মোহনকে করা হত, সেই নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু বলতে চায়নি সেনা।