সিবিআই এবং ইডিকে রাজনৈতিক কারণে 'ব্যবহার' করা হচ্ছে। এই অভিযোগ এনে এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল দেশের ১৪টি বিরোধী দল। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বিরোধী দলগুলির হয়ে এই মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। কংগ্রেস ছাড়াও মামলাকারী দলগুলির মধ্যে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, রাষ্ট্রীয় জনতা দল বা আরজেডি, ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস-এর মতো দল। অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে জানিয়েছেন, বর্তমানে সিবিআই এবং ইডির তদন্তাধীন ৯৫ শতাংশ মামলা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। এই আবহে তিনি সিবিআই ও ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী দলগুলির অপব্যবহার রুখতে গ্রেফতারির আগে এবং পরে নির্দেশিকা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন। রধান বিচারপতি ৫ এপ্রিল এই মামলাটি নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেদিনই এই মামলার প্রথম শুনানি হওয়ার কথা। (আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনই ‘কাঁটা’, সরকারি কর্মীদের অনড় অবস্থানে মাথায় হাত পড়বে তৃণমূলের?)
এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অতি-সক্রিয়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিল বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং বেশ কিছু বিরোধী দলের নেতারা। সেই চিঠিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো নেতার স্বাক্ষর ছিল। সেই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছিল, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তৃণমূল বিধায়ক মুকুল রায় এবং মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা নারায়ণ রানের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডি তদন্ত এত দ্রুত গতিতে হচ্ছে না। তবে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আবার মুখও খোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি দাবি করেন, ইডি ও সিবিআই যেসব মামলার তদন্ত করছে, তার সিংহভাগিই ইউপিএ জমানায় করা হয়েছিল। তারই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইডি এবং সিবিআই।
আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনে যোগ দেওয়া শিক্ষকদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি পর্ষদের, বলা হল কী?
প্রসঙ্গত, ইডি, সিবিআই-এর কেন্দ্রীয় সংস্থার একের পর এক তদন্তে নাজেহাল অবস্থা রাজ্য সরকারের। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার মামলায় জেলে গিয়েছেন তৃণমূলের বড়, মাঝারি, ছোট - সব স্তরের নেতারা। কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে পড়েছে তৃণমূলের 'সেনাপতি' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে বারবার সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। এদিকে শুধু তৃণমূল নয়, ইডি এবং সিবিআই-এর জোড়া ফলায় বিদ্ধি একাধিক রাজ্যের অ-বিজেপি শাসকদল। আম আদমি পার্টির দুই শীর্ষ স্থানীয় নেতা - মণীশ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈন দুর্নীতির অভিযোগে জেলে। এর আগে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতও ইডি-সিবিআই-এর জালে জড়িয়েছিলেন। তেলাঙ্গানার শাসকদল বিআরএস-এর নেত্রী তথা তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কবিতাকে তলব করে জেরা করেছে ইডি। এই আবহে এই সব বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির 'অপব্যবহারের' বিরুদ্ধে দ্বারস্থ হল সুপ্রিম কোর্টে।