সংক্রমণ রুখতে ও দ্রুত করোনাভাইরাস চিহ্নিত করতে এবার র্যাপিড টেস্ট শুরু করল কেরালা। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে কাসারগড় ও পাথানামথিট্টা জেলায় সেই পরীক্ষা হবে।
আরও পড়ুন : Covid-19 মোকাবিলায় রেল কামরায় তৈরি হল আইসোলেশন ওয়ার্ড, জোর ভেন্টিলেটর উৎপাদনে
দীর্ঘদিন ধরেই র্যাপিড টেস্ট শুরুর দাবি তোলা হচ্ছিল। অবশেষে শনিবার অনুমতি দেয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
আরও পড়ুন : Coronavirus in India: সাবধান! রাস্তায় বেরোলেই ভয় দেখাবে 'করোনা হেলমেট'
কিন্তু র্যাপিড টেস্ট কী ও এখন যে টেস্ট করা হয়, তার সঙ্গে পার্থক্যটা কোথায়? সুবিধাই বা কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, র্যাপিড টেস্টের ক্ষেত্রে সোয়াব নয়, রোগীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যা বেশি এলাকাজুড়ে যেমন করা যায়, তেমন অনেক সস্তাও। বর্তমানে করোনা পরীক্ষার জন্য ৩,৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা মতো খরচ পড়ে। সেখানে র্যাপিড টেস্টে লাগবে মোটামুটি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। একইসঙ্গে র্যাপিড টেস্টে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এমনিতে এখন করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেতে এক থেকে দেড়দিন সময় লাগে। র্যাপিড টেস্টে মাত্র ৪৫ মিনিট থেকে দু'ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট মিলবে। নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও র্যাপিড টেস্ট অনেক বেশি সহজ। সোয়াব সংগ্রহের জন্য বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন হয়, রক্তের নমুনা নার্সও নিতে পারবেন। এত সুবিধা থাকলেও র্যাপিড টেস্টের রিপোর্ট চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন : COVID-19 Update: সংক্রমণ রুখতে মোদীর ভরসা 'করোনা কবচ'
তাহলে কেন র্যাপিড টেস্ট করা হচ্ছে? কেরালার সংক্রামিত রোগের নোডাল অফিসার অমর ফেটেল জানান, 'এটা প্রাথমিক ডায়গনোস্টিক টেস্ট নয়। একটি নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্রে ভাইরাসের প্রকোপ শনাক্ত করতে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। ইনকিউবেশন পিরিয়ডে (শরীরে ভাইরাস ঢোকার পর থেকে প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়া পর্যন্ত সময়) কোনও ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। যাঁদের পজিটিভ রিপোর্ট আসবে, তাঁদের সোয়াবের নমুনা নিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। কিন্তু র্যাপিড টেস্টের পর আমরা সম্ভাব্য ক্যারিয়ারকে (বাহক) দ্রুত আলাদা করতে পারব।' বিশেষজ্ঞদের মতে, বিস্তৃত এলাকাজুড়ে যদি প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণের (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) ঘটনা ঘটে, তাহলে র্যাপিড টেস্ট করা যেতে পারে। যা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পক্ষে সুবিধাজনক হবে। তাঁরা সেই এলাকার মানুষজনের স্বাস্থ্যের উপর নিয়মিত নজর রাখতে পারবেন।
আরও পড়ুন : Covid-19: করোনার বিরুদ্ধে নিরলস লড়াই, ৫২ দিন বাড়ি যাননি লখনউয়ের বৈজ্ঞানিক
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক উচ্চপদস্থ কর্তা শ্রীজিত এন কুমার বলেন, 'আমাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরীক্ষা, পরীক্ষা, পরীক্ষার নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমরা সরকারকে বেশ কিছু সময় ধরেই বলে আসছি। র্যাপিড টেস্টের ফলে নজরদারি বাড়বে। যাঁদের কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ও যাঁরা বাইরে থেকে এসেছেন, তাঁদের বাইরেও নয়া কেসকে চিহ্নিত করা যাবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নতির ক্ষেত্রে এটাই সেরা সুযোগ।'
আরও পড়ুন : করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে টাকা-পয়সা নাড়াচাড়ায়, সতর্ক করল ‘হু’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখার নজরদারির ক্ষেত্রে নিজেদের পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে কেরালা। সেখানে কমপক্ষে দুটি এরকম কেস পাওয়া গিয়েছে, যেখানে করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসেনি বা কোয়ারেন্টাইনও করা হয়নি। তবে আমেরিকা, ইতালি, ব্রিটেনের মতো করোনা আক্রান্ত দেশগুলি যা পারেনি, পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি রেখে সেই নীতি নির্ধারণের কাজটি করতে পারে কেরালা।
করোনাভাইরাস যাবতীয় আপডেট জানতে এখানে ক্লিক করুন
ফলে স্বাভাবিকভাবেই করোনা মোকাবিলায় আশার আলো জুগিয়েছে। কিন্তু, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭৯। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। এদিকে, কেরালায় রবিবার বিকেল পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০২। তাঁদের মধ্যে ১৮১ জনের শরীরে এখনও করোনা রয়েছে। চারজন চিকিৎসাধীনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
আরও পড়ুন : 'অক্ষয়কে প্রশ্ন করেছিলাম সত্যি ২৫ কোটি টাকা অনুদান দিতে চাও?': টুইঙ্কেল খান্না
শনিবার সকাল থেকে সাড়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনার প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ছ‘জনের। রবিবার সকালে দু'জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আমদাবাদে ৪৫ বছরের এক ব্যক্তির মারা গিয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীরে ৬৭ বছরের এক ব্যক্তির খবর মিলেছে। একইসঙ্গে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানে নতুন করে করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।