কূটনৈতিক লড়াইয়ে পাল্লা দিতে না পেরে ব্যক্তিগত আক্রমণে নামল পাকিস্তান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কদর্য ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। যিনি রাষ্ট্রসংঘে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আক্রমণের কোনও জবাব দিতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের পর্দাফাঁস করে দেন জয়শঙ্কর। বিশ্বজুড়ে কীভাবে সন্ত্রাসবাদে মদত জোগাচ্ছে পাকিস্তান, তা একেবারে নিখুঁতভাবে বুঝিয়ে দেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। পরবর্তীতে এক পাকিস্তানি সাংবাদিকের প্যাঁচালো প্রশ্নের পালটা দেন। একেবারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদে মদত জোগাচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্বের কোনও ধন্দ নেই। সেইসঙ্গে সন্ত্রাসবাদে মদত জোগানোর পরিবর্তে আর্থিক উন্নতির দিকে নজর দেওয়ার 'পরামর্শ' দেন জয়শঙ্কর।
বিশ্বের মঞ্চে সেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে মোদীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যক্তিগত আক্রমণে নামেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, যেভাবে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে পাকিস্তানের পর্দাফাঁস করে দিয়েছেন জয়শঙ্কর, তা থেকেই নজর ঘোরাতে মোদীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ শানিয়েছেন। তাতে বিশ্বের মঞ্চে তেমন কোনও প্রভাব না পড়লেও পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনীতিতে কিছুটা রেহাই পেতে পারেন বিলাওয়ালরা। নাহলে বিশ্বের মঞ্চে মুখ পুড়ে যাওয়ায় ঘরোয়া রাজনীতিতে চাপে পড়ে যেতেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: আইএসআই গুপ্তচর সন্দেহে চণ্ডীগড় থেকে গ্রেফতার ভারতীয় নাগরিক
কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, রাষ্ট্রসংঘে মুখ পোড়ার মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেও সেই কদর্য আক্রমণের ক্ষেত্রটা আগে থেকেই প্রস্তুত হচ্ছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে পাঠানকোট বায়ুঘাঁটিতে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের হামলার পর থেকে ইসলামাবাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেনি ভারত। সেইসঙ্গে ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহারের পর হল্লা করলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেরকম সমর্থন পায়নি পাকিস্তান।
শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন ভারতে হামলা চালানোর পর পালটা জবাব পেয়েছে। সেটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক বা ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর এয়ার স্ট্রাইক হোক - পাকিস্তানকে একেবারে কোণঠাসা করে দিয়েছে ভারত। চিন ছাড়া তেমন কাউকে পাশেও পাচ্ছিল না পাকিস্তান। কূটনৈতিকভাবেও কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। দেশীয় রাজনীতির স্বার্থে মুখে হুমকি-হুঁশিয়ারি দিলেও অর্থনীতি বাঁচাতে কার্যক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে হাত পাততে হয়েছে পাকিস্তানকে। সেখানে ভারত ক্রমশ বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর দেশের আরও কাছে এসেছে।