সোমবার গভীর রাতে ফের হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে হরিয়ানার গুরুগ্রামে। সেক্টর ৫৭-এ একটি মসজিদ লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। প্রায় ৪৫ জন মিলে সেখানে চড়াও হয় বলে জানা গিয়েছে। পরে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে হরিয়ানা হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ সকালও সেই মসজিদের সামনে পুলিশ মেতায়োন করা ছিল। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যরাত এবং রাত ১টার মাঝখানে।
প্রসঙ্গত, গতকাল একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হরিয়ানার নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। উল্লেখ্য, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় গতকাল হিংসা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।
সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। হিংসার ঘটনায় দুই হোমগার্ড সহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম - নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরও অন্তত ২০০ জন। এরপর থেকেই এলাকায় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গুজব এবং প্ররোচনা ঠেকাতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।
এদিকে গতরাতে এই হিংসার প্রেক্ষিতে এক টুইট বার্তায় খট্টর লেখেন, 'সোমবারের ঘটনাটি দুঃখজনক। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য আমি সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। দোষীদের কোনও মূল্যেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' এদিকে হিংসার আবহে আজ গুরুগ্রামের সমস্ত স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।