চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আমেরিকায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ১৮ বছর বয়সি আকুল ধাওয়ানের। বেশ কয়েক ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর গত ২০ জানুয়ারি উদ্ধার হয়েছিল আকুলের মৃতদেহ। আকুলের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতে জানা গিয়েছে, প্রবল ঠান্ডাতে মৃত্যু হয়েছে আকুলের। এদিকে মৃত্যুর সময় আকুলের পেটে অনেক মদ ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। প্রবল ঠান্ডা আবহাওয়া এবং মত্ত অবস্থায় থাকার জেরেই আকুলের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। আকুলের ময়নাতদন্ত হয় ইলিনয় প্রদেশের শ্যাম্পেন কাউন্টির করোনার অফিসে। (আরও পড়ুন: হাইওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে দামী বিলাসবহুল গাড়ি, মৃত্যু ৩৭ বছর বয়সি বিধায়কের)
আরও পড়ুন: ভোররাতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন দীর্ঘদীন
জানা গিয়েছে, ইলিনয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েস্ট আর্বানা ক্যাম্পাসের একটি ভবনের পিছনের দিকে পড়ে ছিল আকুলের মৃতদেহ। পরে ক্যাম্পাসে নিযুক্ত পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। আকুলের দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। জানা গিয়েছে, গত ১৯ জানুয়ারির সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে বেরিয়েছিলেন আকুল। বিভিন্ন ক্লাব এবং পানশালায় সেই রাতে ঘোরেন আকুল ও তাঁর বন্ধুরা। সেই রাতে সাড়ে ১১টা নাগাদ ক্যানপি ক্লাবে যান আকুলরা। সেই সন্ধ্যায় আরও একবার ক্যানপিতে গিয়েছিলেন তিনি। এই ক্লাবটি তাঁর ক্যাম্পাসের কাছেই ছিল। অভিযোগ উঠেছে, সেই রাতে ক্যানপি ক্লাবের কর্মীরা আর আকুলকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি। রিপোর্টে দাবি করা হয়, আকুল নাকি বারবার আর্তি জানিয়েছিলেন যাতে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয় ক্লাবে। পরে আকুলের জন্য দু'বার শেয়ার ট্যাক্সি ডাকা হয়েছিল। তবে তাতে চড়তে অস্বীকার করেছিলেন আকুল।
জানা যায়, জানুয়ারির শেষ ভাগে ইলিনয়তে রাতের তাপমাত্রা মাইনাস ২০ থেকে মাইনাস ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাচ্ছিল। এই আবহে আকুল রাতে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে বারবার ফোন করে তাঁর বন্ধু এবং আত্মীয়রা। তবে আকুল ফোন তোলেনি। পরে ক্যাম্পাসের পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ক্যাম্পাসের পুলিশ দাবি করে, অভিযোগ পেয়ে নাকি এক অফিসার খুব ধীর গতিতে সেই গোটা রাস্তা টহল দেন। তবে আকুলকে তিনি নাকি কোথাও দেখতে পাননি। পরের দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা আকুলের দেহ দেখতে পায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। আকুলের মা-বাবা ইশ এবং ঋতু অভিযোগ করেন, নিখোঁজ হওয়ার সময় আকুলের ফোনের যে 'লোকেশন' দেখাচ্ছিল, তার থেকে মাত্র ৪০০ ফুট দূরে পড়ে ছিল তাঁদের ছেলের দেহ। এই আবহে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করা হয় এই ঘটনায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, আকুল ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবোটিক্স নিয়ে পড়াশোনা করতে এসেছিলেন। গতবছর সেপ্টেম্বরেই ১৮ বছর হয়েছিল তাঁর।