ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তি মানিকন্ট্রোল স্টার্টআপ কনক্লেভ ২০২৩ -এ যোগ দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি যখন প্রথমবার তার কোম্পানিতে নিয়োগ শুরু করেছিলেন, তিনটি বিষয়ের ওপর তিনি নজর রাখতেন। মঞ্চে খোলামেলা আড্ডার সময় মূর্তি তার ছেলে রোহানকে বলেন, ‘আমি কী ধরনের কর্মী নিয়োগ করতে চাই, তা আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।’
প্রথমত, একজন কর্মীর দক্ষতার দিকে তিনি নজর দেন, তা না হলে কাজের অগ্রগতি ঠিক ভাবে হবে না বলেই মনে করেন নারায়ণ মূর্তি। ইনফোসিস কর্তার বিচারে দ্বিতীয় বিষয়টি অবশ্যই মূল্যবোধ। শুরু থেকেই একে অপরের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তৃতীয়ত, কোম্পানির কর্মচারীদের একমাত্র আপনার কথার ওপর নির্ভর করবে। এই ধারণাটি ভবিষ্যতে পাল্টে যাবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই, এমনটাই বলেই মূর্তি। আপনাকে সত্যবাদী হতে হবে, দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে আপনার মতামত প্রকাশ করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই মানুষের সাথে কথা বলতে হবে, এর সাথে সাথেই সত্যের ওপর ভিত্তি করে আপনাদের স্বপ্ন গড়ে তুলতে হবে, এমনটাই মনে করেন তিনি।
‘যখন আপনি রংধনু রঙের স্বপ্ন আঁকবেন এবং ভালো দিনগুলি সম্পর্কে কথা বলবেন, তখন মানুষ আপনার যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গি ক্রয় করতেও পারে। দিনের শেষে সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে অবশ্যই দলের প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকা জরুরি।’ এমনটাই আলোচনার শেষ লগ্নে এসে বলেন নারায়ণ মূর্তি। তিনি আরও স্মরণ করেন যে তিনি যখন যাত্রা শুরু করেছিলেন, তখন ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতারা জানতেন যে তিনি তাদের চেয়ে বেশি বেতন পান।
ইনফোসিস সংস্থাতে কাজ করা সাত বন্ধু মিলে একটি সংস্থার শুরু করেন এবং ৪০ বছর পর সেই সংস্থাটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আইটি সংস্থাতে পরিণত হয়। অবসর নেওয়ার দিন পর্যন্ত নারায়ণ মূর্তি সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে অফিসে যেতেন, এটাই তার অভ্যাস ছিল। ইনফোসিসের কর্ণধারের মতে, নিজে সময় মেনে চলতেন, যাতে কর্মীদের মধ্যে সময় নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়। নারায়ণ মূর্তি পড়ুয়াদের উদ্যোগপতি হওয়ার জন্য আবেদন করেন যাতে তাঁরা কর্ম সংস্থার বা চাকরির সুযোগ তৈরি করতে পারেন। এভাবেই একমাত্র দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব, তাঁদের সাহায্য করা সম্ভব বলে নারায়ণ মূর্তি জানিয়েছেন। অভিজ্ঞ এই আইটি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোগপতি কাজের প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বাসযোগ্যতার মত বিষয়গুলির প্রতি নজর দিতে বলেন তরুণ প্রজন্মকে।