Shark Tank India season 2: টেলিভিশন, OTT এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ দর্শক। শার্ক ট্যাঙ্কে 'পিচ' করেই ভাগ্য বদলে গিয়েছে বহু উদ্যোক্তার। বিনিয়োগ পেলে তো 'পোয়া বারো'। সেটা না পেলেও ক্ষতি নেই। প্রোডাক্ট ভাল হলে, তার ভালই পরিচিতি তৈরি হয়ে যায়। বিক্রিও বেড়ে যায়। সেই প্রমাণই মিলল আরও একবার।
সম্প্রতি শার্ক ট্যাঙ্কের দ্বিতীয় সিজনে এসেছিলেন গণেশ বালাকৃষ্ণন নামের এক উদ্যোক্তা। Flatheads নামের এক জুতোর সংস্থা তাঁর। সেই সংস্থার জন্যই বিনিয়োগ খুঁজতে শার্ক ট্যাঙ্কে এসেছিলেন তিনি। তাঁর সেই পিচ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কঠিন পরিস্থিতি, খারাপ ব্যবসার মধ্যেও তাঁর অদম্য জেদ এবং জুতোর প্রতি তাঁর প্যাশান নজর কাড়ে সকলের। বিনিয়োগ টানতে না পারলেও তাঁর সংস্থার ভালই প্রচার হয়েছে। আর সেই কারণেই তার বিপুল বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। আরও পড়ুন: Shark Tank India Networth: লেন্সকার্টের পীযূষ না সুগারের বিনীতা, কোন শার্ক বেশি বড়লোক?
অবস্থা এমনই যে, সমস্ত স্টক ইতিমধ্যেই ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছে ফ্ল্যাটহেডস-এর।
গণেশ বালাকৃষ্ণন কিন্তু ব্যবসার জগতে নতুন নন। এর আগেও ৩টি সংস্থা চালু করেছেন তিনি। কিন্তু কোনওটাতেই সাফল্য পাননি IIT বম্বের এই কৃতী পড়ুয়া। ২০১৯ সালে তিনি ফ্ল্যাটহেডস শুরু করেন। কিন্তু তার ঠিক পরপরই কোভিড মহামারী এসে যায়। এমন অবস্থায় তাঁর সমস্ত ব্যবসার পরিকল্পনাই ভেস্তে যায়। লকডাউনের কারণে ২০২০ সালে সেভাবে মানুষ বাইরে বের হননি। ফলে জুতো কেনার দিকেও সেভাবে ক্রেতাদের উত্সাহ ছিল না।
ফ্ল্যাটহেডস-এর জুতোগুলি একেবারে মিনিমালিস্ট ডিজাইনের। সাধারণ ক্যানভাস শু-এর মতোই। এগুলি প্রকৃতি বান্ধব পদ্ধতিতে বানানো হয়েছে বলে দাবি সংস্থার। এছাড়া সাধারণ ক্যানভাস শু খুব বেশি 'ব্রিদেবল' হয় না। অর্থাত্ কাপড় দিয়ে খুব বেশি হাওয়া প্রবেশ করে না। ভারতের উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়ায় যা পরা সমস্যার বিষয়। কিন্তু ফ্ল্যাটহেডস-এর দাবি, তাদের জুতোগুলি 'ব্রিদেবল' মেটিরিয়ালে তৈরি। এর ফলে পা ঘেমে যাওয়া, গরম লাগার সমস্যা হয় না।
ফ্ল্যাটহেডস-এর ব্যবসায়িক রেকর্ড ভাল না হওয়ায়, তাতে বিশেষ আগ্রহ দেখাননি বিনিয়োগকারী 'শার্ক'রা। অনেকেই তাঁকে নতুন করে শুরু করার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে লেন্সকার্ট কর্তা পীযূষ বনসল তাঁকে সংস্থার ৩৩% মালিকানার বিনিময়ে ৭৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। যদিও সেটি ফিরিয়ে দেন গণেশ। অপর শার্ক, শাদি ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা অনুপম মিত্তল তাঁকে একটি চাকরির অফারও দেন।
এপিসোড অনলাইনে ছড়িয়ে পড়তেই তা ট্রেন্ডিং হতে শুরু করে। আর তা হবে না-ই বা কেন। আইআইটি বম্বের প্রাক্তনী। সহজেই কোটি টাকার চাকরি জোগাড় করতে পারতেন তিনি। কিন্তু তা না করে একের পর এক ব্যবসা গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন গণেশ। সংসার চলছে স্ত্রীর টাকায়। ব্যবসা দাঁড় করাতে এখনও লড়াই করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর এই কাহিনীই সবাইকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাঁর পাশে দাঁড়াতে, এবং প্রোডাক্টটি ট্রাই করতে অনেকেই ফ্ল্যাটহেডস-এর জুতো কিনতে শুরু করেন।
এরপর এক লিঙ্কডইন পোস্টে গণেশ লেখেন, 'ভারতে আমাদের সম্পূর্ণ স্টকই প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার সাইজের জুতো না পেলে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের মার্কিন মুলুক বা UAE-এর বন্ধুদের এই জুতো ট্রাই করে দেখতে বললে আমি অত্যন্ত কৃতার্থ হব।' আরও পড়ুন: Ashneer Grover: শার্ক ট্যাঙ্ক সিজন টু দেখব না, বাকি শার্কদেরও আনফলো করে দিয়েছি
এর পাশাপাশি তিনি বলেন, 'সর্বভারতীয় টেলিভিশনে ভেঙে পড়াটা কারও আত্মবিশ্বাসের পক্ষেই ভাল নয়। কিন্তু আমি কখনই ভাবিনি যে আমার এই এপিসোডটা এভাবে সবাই গ্রহণ করবেন। আমার খুব ভাল লাগছে যে সবাই এই উদ্যোগী মনোভাবের পাশে দাঁড়িয়েছেন।' সেই সঙ্গে সমস্ত শার্কদেরও তাঁকে দিশা দেখানোর জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন গণেশ।