ট্র্যাভেল এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট কাটলে সরাসরি যাত্রীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট ট্র্যাভেল এজেন্টকে সেই টাকা দেওয়া হবে। লকডাউনের সময় যে টিকিট কাটা হয়েছিল, সেই টাকা ফেরত দেওয়ার মামলায় এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সওয়াল-জবাবের পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রবাসী লিগাল সেলের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত। তারপর বৃহস্পতিবার টিকিটের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশনের (ডিজিসিএ) সব সুপারিশ মেনে নেয় বিচারপতি অশোক ভূষণ, আরএস রেড্ডি এবং এমআর শাহ।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, 'ক্রেডিট শেল স্কিম'-এর সুবিধা নিতে পারবেন না ট্র্যাভেল এজেন্টেরা। যাঁরা লকডাউনের সময় যাত্রীদের টিকিট কেটে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ট্র্যাভেল এজেন্টের নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না আমরা। তাঁদের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে সুপারিশ করা হচ্ছে যে এজেন্টের মাধ্যমে যেন শুধু ক্রেডিট শেল স্কিম ব্যবহার করতে পারেন যাত্রীরা।’
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, যাত্রী ও ট্র্যাভেল এজেন্টের মধ্যে যে চুক্তি আছে, তাতে কেন্দ্রের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে যাত্রীরা যাতে টাকা ফেরত পেয়ে যান বা ভাউচার পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে যথাসম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সুপ্রিম কোর্টে জানান সলিসিটর জেনারেল।
কীভাবে সেই ভাউচারের ট্রান্সফার করা হবে, তা নিয়ে শীর্ষ আদালত প্রশ্ন করে, কোনও যাত্রী যদি এজেন্টকে নিজের ভাউচার দেন, তাহলে কি সেটার (অর্থ) ফেরত দেওয়া হবে? সেই প্রশ্নের জবাবে মেহতা জানান, কোনও যাত্রী যদি নিজের এজেন্টকে ভাউচার দিয়ে টাকা ফেরত নিতে চান, তাতে কেন্দ্রের কোনও আপত্তি নেই।
তার আগে, সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা পেশ করেছিল বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তাতে জানানো হয়, লকডাউনের সময়ে যে টিকিট বুক করা হয়েছিল, শুধু যাত্রীরাই সেই 'ক্রেডিট শেল স্কিম' ব্যবহার করতে পারবেন। ট্র্যাভেল এজেন্টরা সেই সুবিধা পাবেন না। একইসঙ্গে জানানো হয়েছিল, বিদেশ থেকে যে বিমান ওড়ার কথা ছিল, তার টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। বিদেশি এবং দেশীয় উড়ান সংস্থা উভয়ের ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম প্রয়োজ্য হবে। পরদিনই সলিসিটর জেনারেল জানিয়েছিলেন, বিদেশ থেকে দেশে ফেরার জন্য যে বিমানের টিকিটগুলি ভারতে কাটা হয়েছে, সেগুলির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যেতে পারে।
টাকা ফেরতের বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের তিনটি ভাগে ভাগ করেছিল ডিজিসিএ -
১) যে যাত্রীরা লকডাউন শুরুর আগেই ২৪ মে পর্যন্ত যাত্রার জন্য টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের 'ক্রেডিট শেল স্কিম' ও সেটির আওতায় ইনটেনসেটিভের মাধ্যমে টাকা রিফান্ড করা হবে।
২) লকডাউনের মেয়াদের মধ্যে যাত্রার জন্য যে যাত্রীরা লকডাউন শুরুর পর টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের অবিলম্বে টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। কারণ সেই সময়ে বুকিং চালু রাখার কথা ছিল না উড়ান সংস্থাগুলির।
৩) ২৪ মে'র পর যে টিকিটের বুকিং করা হয়েছিল, ‘কার’ বা বিমান পরিবহনের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত নিয়মের মাধ্যমে সেই অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করা হবে।