ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্বে গমের চাহিদা বেড়েছে। মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম বৃহত দুই গম রফতানিকারক দেশ। তবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বহু দেশ। আবার ইউক্রেনে যুদ্ধ চলায় গম রফতানি করতে পারছে না সেই দেশ। এই আবহে ভারত শূন্য স্থান পূরণের লক্ষ্যে নেমেছে। গম রফতানি বাড়ানোর চেষ্টায় কেন্দ্রীয় সরকার মরক্কো, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, আলজেরিয়া এবং লেবাননে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে।
বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, 'বিশ্বব্যাপী শস্যের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। এরই মধ্যে ভারত ২০২২-২৩ সালে রেকর্ড ১০ মিলিয়ন টন গম রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।' এতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্য রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এপিইডিএ) অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে গম রফতানির জন্য একটি টাস্কফোর্স তৈরি করেছে।
যেহেতু বৈশ্বিক বাজারে ভারতীয় গমের চাহিদা বেড়েছে, কৃষক, ব্যবসায়ী এবং রফতানিকারকদের সমস্ত মানের নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাই ভারত গমের একটি 'নির্ভরযোগ্য' বৈশ্বিক সরবরাহকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে বলে যোগ করেছে মন্ত্রক। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে বাণিজ্য বিভাগ প্রধান গম উত্পাদনকারী রাজ্যগুলি- পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানে রফতানি সম্পর্কে বিশেষ সভা আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। গম রফতানির প্রচার এবং চালানের গুণমান নিশ্চিত করতে হরিয়ানার কর্নালে কৃষক, ব্যবসায়ী এবং রফতানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা সভারও আয়োজন করে APEDA।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর! একলাফে ১৩% বাড়তে পারে DA, মিলবে ৩ মাসের বকেয়া
২০২১-২২ সালে ভারত রেকর্ড ৭ মিলিয়ন টন গম রফতানি করেছিল যার মূল্য ২.০৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। এর প্রায় ৫০ শতাংশ গম বাংলাদেশে রফতানি করা হয়েছিল। এদিকে সম্প্রতি ভারতকে গম সরবরাহকারী হিসাবে অনুমোদন দিয়েছে মিশর। উল্লেখ্য, বিশ্বের বৃহত্তম গম আমদানিকারক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হল মিশর। এর আগে গমের জন্য ইউক্রেন এবং রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ছিল তারা। কিন্তু ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের আবহে বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হয়েছে মিশর। প্রসঙ্গত, বিশ্বে চিনের পর ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উত্পাদনকারী দেশ। ভারতের ভাণ্ডারে অতিরিক্ত গম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তবে পরিবহণের প্রতিবন্ধকতার জেরে এই অতিরিক্ত গম রফতানি করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তবে সেই প্রতিবন্ধকতা কাটাতে বিগত একমাসে অনেক পদক্ষেপ করেছে সরকার।