লোকসভা ভোট ঘনিয়ে এসেছে। এই আবহে সরকারি কর্মীদের খুশি করতে উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্র থেকে রাজ্য সরকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, হোলির আগেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি হতে পারে। এরই মাঝে বাংলায় দুই দফায় বেড়েছে ডিএ। আর এবার এই রাজ্যে সরকারি কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করা হল।
1/7 মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। এবার পেনশন নিয়ে এই রাজ্যের কর্মচারীদের বড় খবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেওয়া হল, এই রাজ্যে কার্যকর করা হচ্ছে পুরনো পেনশন স্কিম। এর ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের লক্ষ্মীলাভ হতে চলেছে অবসরকালে। দীর্ঘদিন ধরেই ওপিএস চালুর দাবি উঠছিল এই রাজ্য সহ গোটা দেশে। এই পরিস্থিতিতে ওপিএস কার্যকর করার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
2/7 রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্য সিকিমের রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ওপিএস চালুর ঘোষণা করেছেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ২০০৬ সালের ৩১ মার্চের আগে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া কর্মীদের পুরনো পেনশন স্কিমের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। এই আবহে উত্তরপূর্বের প্রথম রাজ্য হিসেবে ওপিএস চালু হল সিকিমে। শুধু তাই নয়, প্রথম এনডিএ শাসিত রাজ্য হিসেবে সিকিমে চালু হল ওপিএস।
3/7 প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে জাতীয় পেনশন স্কিম এবং পুরোনো পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি চলছে দেশে। বহু ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মীরা পুরনো ব্যবস্থা চালু করার দাবি করেছে। এই আবহে গত অক্টোবরে 'পেনশন শঙ্খনাদ মহাব়্যালি'-র ডাক দেওয়া হয়েছিল দিল্লিতে। সরকারি কর্মীদের বক্তব্য, এনপিএস-এর অধীনে অবসর গ্রহণের পরে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত তারা। এই আবহে মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে শুরু করে একাধিক কংগ্রেস নেতা সরকারি কর্মীদের দাবির পক্ষেই সওয়াল করেছেন। এই সবের মাঝে এক এনডিএ শাসিত রাজ্যে ওপিএস কার্যকর হওয়ার বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
4/7 এনপিএস বনাম ওপিএস: দুই পেনশন নীতির ফারাক কোথায়? কত টাকা জমানো হয়েছে, কত বছরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কী ধরনের বিনিয়োগ করা হয়েছে, বিনিয়োগ থেকে কত আয় হয়েছে - এই সমস্ত বিষয়গুলির উপর নয়া পেনশন প্রকল্প নির্ভর করে। সেখানে পুরনো ব্যবস্থায় শেষ পাওয়া বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পাওয়া যায়। যা নির্ধারিত ছিল। সেইসঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও মিলত এতে।
5/7 এদিকে নয়া পেনশন প্রকল্পের আওতায় নিজের কর্মজীবনে যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করেন কর্মচারীরা, অবসরের সময় সেটার ৬০ শতাংশ টাকা তোলা যায়। যে টাকা তুললে কর দিতে হয় না। বাকি ৪০ শতাংশ অ্যানুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, শেষ যে বেতন তুলেছিলেন সরকারি কর্মচারী, সেটার ৩৫ শতাংশের মতো পেনশন বাবদ পাওয়া যায়। তবে সেটা যে মিলবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ পুরোটাই বাজারের উপর নির্ভর করে।
6/7 সরকারি কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, পুরনো পেনশন প্রকল্পে কোনও ঝুঁকি নেই। নয়া পেনশন প্রকল্পে ঝুঁকি আছে। যদিও অপর অংশের বক্তব্য, ন্যাশনাল পেনশন স্কিম যে বাজার-নির্ভর, তা ঠিক। কিন্তু দীর্ঘকালীন ক্ষেত্রে তাতে বেশি লাভবান হবেন কর্মীরা। তবে ঝুঁকি নিতে নারাজ অধিকাংশ সরকারি কর্মী। এই আবহে একাধিক রাজ্যে পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনার পক্ষে দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
7/7 এর আগে ২০০৩ পর্যন্ত বাজেট বরাদ্দ থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন দিল সরকার। তবে বাজপেয়ী জমানায় চালু হয় ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় এনপিএস। এই নয়া ব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক বোঝা হালকা হয়। প্রাথমিক ভাবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য ছিল। পরবর্তীতে সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য তা প্রযোজ্য হয়। তবে বিগত কয়েক বছরে বিরোধী শাসিত বেশ কিছু রাজ্যে কার্যকর করা হয়েছে ওপিএস।