প্রায় ১৯ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চলে বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের বাড়ি, নার্সিংহোম সহ একাধিক জায়গায়। এই সময়ে মোট ৭২ লাখ টাকা নগদ এবং অনেকটা সোনা উদ্ধার করেছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। কংগ্রেসের টিকিটে উপনির্বাচনে জিতে তৃণমূলে আসা এই ব্যবসায়ী-বিধায়কের মোট সম্পত্তির পরিমাণ জানেন?
1/6 বুধবার সকালে বায়রন বিশ্বাসের দুই বাড়ি থেকেই বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিড়ি কারখানা, কাগজ কারখানার পাশাপাশি তাঁর স্কুল এবং নার্সিংহোমেও তল্লাশি চালানো হয় গতকাল। সব মিলিয়ে মোট ৭২ লাখ টাকা নগদ উদ্ধার হয় বলে জানা গিয়েছে বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে। আয়কর ফাঁকির অভিযোগেই বায়রনের বাড়িতে আধিকারিকরা হানা দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
2/6 আয়কর দফতর সূত্রে খবর, মাসকয়েক আগে বায়রন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে করফাঁকির অভিযোগ এসেছিল। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছিল, কোনও এক ভুয়ো সংস্থা খুলে নাকি বিধায়ক টাকা নয়ছয় করছেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই প্রাথমিকভাবে তদন্ত চালায় আয়কর দফতর। তার সেই রেশ ধরেই বায়রনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় বুধবার।
3/6 আয়কর দফতর সূত্রে খবর, বায়রনের ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিধায়কের বাবার থেকেও এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। বিধায়ক যে পরিমাণ কর দিচ্ছেন, তার সঙ্গে তাঁর সম্পত্তির সঙ্গতি রয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা। আয়কর রিটার্নে যে যে ব্যবসা দেখানো হয়েছে, সেটার বাইরেও কোনও ব্যবসা বা আর্থিক লেনদেন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হয় তল্লাশি চলাকালীন।
4/6 এদিকে সাগরদিঘি উপ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন বায়রন, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭-১৮ সালে তাঁর আয় ছিল ৩৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ২ টাকা। ২০১৮-১৯ সালে সেই আয় বেড়ে হয় ৬৯ লক্ষ ১৬ হাজার ১৪৯ টাকা। ২০১৯-২০ সালে বায়রনের আয় ছিল ৪৩ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৪০ টাকা। ২০২০-২১ সালে আয় ছিল ৪০ লক্ষ ৪২ হাজার ১৭০ টাকা। ২০২১-২২ সালে আয় বেড়ে হয় ৫৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৭০ টাকা।
5/6 এদিকে বায়রনের স্ত্রী সূরিয়া বিশ্বাস ২০১৭-১৮ সালে আয় করেছিলেন ২২ লক্ষ ২১ হাজার ৮৮ টাকা। ২০১৮-১৯ সালে সেই আয় বেড়ে হয় ৪৫ লক্ষ ৪৪ হাজার ৩৬৫ টাকা। ২০১৯-২০ সালে সূরিয়ার আয় ২০ লক্ষ ১২ হাজার ৬০০ টাকা। ২০২০-২১ সালে আয় ছিল ২৬ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৪০ টাকা। ২০২১-২২ সালে আয় বেড়ে হয় ৪১ লক্ষ ৬১ হাজার ৩০০ টাকা।
6/6 এদিকে হলফনামা অনুযায়ী, বায়রনের হাতে উপনির্বাচনের সময় নগদ ছিল ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। আর স্ত্রীর কাছে ছিল ৮৫ হাজার। বায়রনের একটি স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ছিল ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রী সূরিয়ার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫২ হাজার টাকা ও অপর অ্যাকাউন্টে ৩১ লাখ টাকার কিছু বেশি ছিল। বায়রনের গ্যারাজে ৪৫ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি আছে। বায়রনের নামে ছিল ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকার সোনা আর স্ত্রীর নামে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার সোনা। সব মিলিয়ে বায়রনের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। এবং তাঁর স্ত্রী আরও ৩ কোটি ৩১ লক্ষ ২৩ হাজারের মালিক।