সেইসব ঋণ গ্রাহকদের ওপর রেপো রেট বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে চলেছে যারা বাড়ি কেনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে গৃহঋণ নিয়েছেন। দেশের আর্থিক অবস্থা ফেরাতে বারংবার রেপো রেট সংশোধন করা হচ্ছে। এর জেরে সস্তা গৃহঋণের যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে। আরবিআই গত সপ্তাহে সুদের হার ০.৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে। এর আগেও দুই দফায় সুদের হার বাড়ানো হয়েছিল। এর জেরে রেপো রেট বেড়ে ৫.৪ শতাংশ হয়েছে। মে থেকে অগস্টের মধ্যে রেপো রেট ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
1/7 ২০১৯ সালের ১ অক্টোবরের পরে ব্যাঙ্কগুলির দ্বারা অনুমোদিত সমস্ত খুচরা ঋণের সুদের হার ‘ফ্লোটিং রেটে’। এগুলি এক্সটার্নাল বেঞ্চমার্কের সাথে যুক্ত। বেশিরভাগ ঋণের মানদণ্ড হল রেপো রেট।
2/7 সাধারণত, সুদের হার বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি EMI বাড়ানোর পরিবর্তে ঋণের মেয়াদ বাড়ায়। আপনি ব্যাঙ্ককে মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমতি দেবেন নাকি আপনি আপনার ঋণের EMI বাড়াতে বলবেন তা আপনার ব্যাপার। প্রসঙ্গত, ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর অর্থ হল আপনাকে সুদ হিসাবে আরও বেশি অর্থ দিতে হবে। তবে ইএমআই বাড়ানো হলে ততটা বোঝা বাড়বে না।
3/7 উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি বার্ষিক ৭.৫৫ শতাংশ সুদের হারে ৫০ লক্ষ টাকার একটি গৃহ ঋণ নিয়েছেন। এই ঋণের মেয়াদ ২৫ বছর। এর EMI হবে ৩৭,১১২ টাকা। সুদের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর পর সুদের হার বেড়ে হবে ৮.০৫ শতাংশ। আপনি যদি ঋণের মেয়াদ বাড়াতে না চান, তাহলে EMI বেড়ে ৩৮,৭৫৭ টাকা হবে। এইভাবে, আপনাকে প্রতি মাসে ১,৬৪৫ টাকা বেশি দিতে হবে। এইভাবে, ২৫ বছরে মোট সুদের বোঝা ৪.৯৩ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পাবে।
4/7 যেহেতু ব্যাঙ্কগুলি ঋণের মেয়াদ বাড়াতে পছন্দ করে, তাই ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে গৃহঋণ গ্রাহকদের সুদের ব্যয় দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়। এখন আমরা উপরের উদাহরণে ধরে নিই যে EMI বাড়ানোর পরিবর্তে, ব্যাঙ্ক ঋণের মেয়াদ ৫০ মাস বাড়িয়ে দিল। এর অর্থ হল সুদের হার বাড়ানোর পরে, মোট ২৯ বছর এবং ২ মাসে অতিরিক্ত সুদ দেওয়া হবে প্রায় ১৮.৫৭ লক্ষ টাকা।
5/7 ধরুন আপনি ৮.০৫ শতাংশ সুদের হারে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এই ঋণের মেয়াদ ২৫ বছর। এর EMI হবে ৩৮,৭৫৭ টাকা। আপনি যদি প্রিপেমেন্ট ছাড়াই আপনার ইএমআই পরিশোধ করতে থাকেন, তাহলে ২৫ বছরের মধ্যে আপনি সুদ হিসাবে মোট ৬৬.২৭ লক্ষ টাকা দেবেন।
6/7 আপনার বেতন প্রতি বছর বৃদ্ধি পায়। সেজন্য প্রতি বছর আপনি আপনার ইএমআই বাড়াতে পারেন। আপনি প্রতি বছর কমপক্ষে ৫% ইএমআই বাড়ানোর কথা ভাবতে পারেন। এটি করার মাধ্যমে, আপনার ২৫ বছরের গৃহঋণ মাত্র ১৪ বছরে সম্পূর্ণ হবে এবং আপনার সুদের ব্যয় নেমে আসবে মাত্র ৩৯ লক্ষ টাকায়। যদি আপনি ১০ শতাংশ করে ইএমআই বাড়ান, তাহলে আপনাকে সুদ বাবদ দিতে হবে মাত্র ৩১.৩৭ লাখ টাকা।
7/7 আপনি যদি EMI বাড়াতে না পারেন, তাহলে আপনার বার্ষিক বোনাস ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করা উচিত। আপনি যদি প্রতি বছর ১ লাখ টাকা প্রিপেমেন্ট করেন, তাহলে আপনার সুদের খরচ ২৭ লাখ টাকায় কমে আসবে। এইভাবে আপনার ঋণের মেয়াদ ১৬তম বছরে শেষ হবে। আর যদি ইএমআই বাড়ানোর পাশাপাশি প্রি পেমেন্ট করেন, তাহলে আরও আগে আপনার ঋণের মেয়াদ শেষ হবে এবং আপনার সুদের পরিমাণও অনেক কম হবে।