ভারতের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোন মিলেছে চলতি বছরের শুরুর দিকেই। চিন সীমান্তের খুব কাছেই তৈরি হবে সেই বাঁধ। সেই বাঁধ তৈরি করতে যত খরচ হবে, বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে সেই পরিমাণ অর্থই পড়ে রয়েছে। ভারতের তুলনায় পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন এখানেই দাঁড়িয়ে।
1/6 উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই 'দিবাং মাল্টিপার্পাস প্রোজেক্ট'-এর অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। উত্তরপূর্বের পাহাড়ি অঞ্চলে চিনা সীমান্তের খুব কাছে তৈরি হবে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি। 'ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিসিটি পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড' এই প্রকল্প তৈরির দায়িত্বে থাকবে। অরুণাচলপ্রদেশের লোওয়ার দিবাং উপত্যকায় দিবাং নদীর ওপর তৈরি হবে এই বাঁধ বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।
2/6 জানা গিয়েছে, অরুণাচলের এই বাঁধ থেকে ২৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে প্রতিবছর। এই প্রকল্পটি তৈরি করতে মোট ৩.৯ বিলিয়ন ডলার লাগবে বলে জানা গিয়েছে। মোট নয় বছর লাগবে এই বাঁধটি নির্মাণ করতে। এর আগে তিব্বতে ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছেই চিনও বেশ কয়েকটি বাঁধ তৈরি করে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ বদলের পথ তৈরি করেছে। এই আবহে এবার ভারতও চিনা সীমান্তের এত কাছে একটি বাঁধ তৈরির সিদ্ধান্ত নিল।
3/6 এদিকে যেখানে ভারতে একটি বাঁধ তৈরি করতে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার খচ করা হবে, সেখানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে পড়ে রয়েছে এই পরিমাণ অর্থই। সম্প্রতি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক হাল হকিকতের রিপোর্ট পেশ করেছিলেন সেদেশের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার। তিনি জানান, গত কয়েক মাসে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার থেকে ১৭৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। এর জেরে সেদেশের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে পড়ে রয়েছে মাত্র ৩.৯ বিলিয়ন ডলার। এদিকে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডারে রয়েছে ৫২৬.২০১ বিলিয়ন ডলার।
4/6 অন্যদিকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পাকিস্তানের জিডিপি বৃদ্ধির হার মাত্র ০.২৯ শতাংশ। বর্তমানে পাকিস্তানের মোট অর্থনীতির মূল্য ভারীয় মুদ্রায় মাত্র ৮৪.৭ লাখ কোটি টাকা। এদিকে ভারতের মোট জিডিপি ২৭২.৪১ লাখ কোটি বা ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের অর্থনীতি ভারতের প্রায় তিনগুণ ছোট।
5/6 গত ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল বছরে ১৬১৩.৮ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭১.৫৩ টাকা। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা ১১ শতাংশ কমে গিয়েছে। এই আবহে গতবছর পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় গিয়ে ঠেকে ১৩৯৯.১ ডলারে। পাক অর্থমন্ত্রী ইশাক দার জানান ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১৩৯৯.১ ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৮.১০ টাকা। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের মাথাপিছু আয় ছিল প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
6/6 একবছর আগের বন্যার ধাক্কা সামলে উঠে গতঅর্থবর্ষে পাকিস্তানের কৃষি খাতে ১.৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে বলে জানান সেদেশের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেখানে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক খাতে বৃদ্ধি ছিল ৬.৮৩ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা সংকুচিত হয়ে যায় ২.৯৪ শতাংশ। পাকিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য হল তুলো। সেই তুলোর উৎপাদন গত অর্থবর্ষে কমেছে ৪১ শতাংশ। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩-এ ১০ লাখ টন বেশি গম উৎপাদন হয়েছে পাকিস্তানে। তবে ধান উৎপাদন কমেছে ২০ লাখ টন। এই সবের মাঝেও পাকিস্তানের কর আদায় বেড়েছে ১৬.৫ শতাংশ।