আবার তীব্র ভর্ৎসনার সম্মুখীন হল ইডি। গরুপাচার মামলা নয়াদিল্লিতে নিয়ে যেতে চেয়েই সওয়াল করেন ইডির আইনজীবী। সেই শুনানিতে সিবিআই বিশেষ আদালতে বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল ইডি। গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং সায়গল হোসেন গ্রেফতার হয়ে এখন তিহাড় জেলে বন্দি। এই মামলা আসানসোল থেকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে স্থানান্তর করার আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। তাতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। বিচারক সরাসরি প্রশ্নও করেন, কোন অধিকারে এই মামলার তদন্ত করছে ইডি?
এদিকে আজ, শনিবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ইডির করা আবেদনের উপর শুনানি চলছিল। ওই মামলার শুনানিতে বিচারক প্রশ্নে করেন ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে। আজ শুনানিতে অনুব্রতের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। সায়গলের আইনজীবী ছিলেন শেখর কুন্ডু। আবার সিবিআই তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী রাকেশ কুমার উপস্থিত ছিলেন। শুনানির শুরুতেই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ইডির আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এখনও পর্যন্ত গরু পাচার মামলায় ঠিক কতগুলি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে?’ জবাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারি অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, একটি চার্জশিট এবং চারটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। বিচারক তখন প্রশ্ন করেন, ‘কতজন সাক্ষী রয়েছেন এই মামলায়?’ সুশান্ত ভট্টাচার্য জবাব দেন প্রায় পাঁচশো।
অন্যদিকে তখনই বিচারক ক্ষুব্ধ হন। আর ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘এই মামলাটি আপনারা তদন্ত করছেন কোন অধিকারে? কেন্দ্রীয় সরকার কি আপনাদের কোনও ক্ষমতা দিয়েছে? যদি দিয়ে থাকে, তা হলে কাগজ দেখান। আপনারা কেন? এনআইএ বা অন্য কোনও সংস্থা দিয়ে কেন এই মামলার তদন্ত হবে না? ব্যাখ্যা করুন। এই মামলার বেশিরভাগই এখানকার সিবিআই আদালতে শুনানি হচ্ছে। কীভাবে আপনারা নিজেদের ইচ্ছে মতো অন্য কোনও আদালতে এই মামলা নিয়ে যেতে চাইছেন? তাও আবার পাঁচশো সাক্ষীকে সঙ্গে করে।’ বিচারকের এমন রুদ্রমূর্তি থেকে হকচকিয়ে যান ইডির আইনজীবী থেকে শুরু করে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারও।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভার অন্দরে রণক্ষেত্র চেহারা, শাসক–বিরোধী কাউন্সিলরদের মারপিঠ
তারপর ঠিক কী ঘটল? তবে এখানেই থেমে থাকেননি বিচারক। বিচারক রীতিমতো ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘এভাবে বিচার হবে না। দ্রুত ট্রায়ালও সম্ভব হবে না। ইডি কি এভাবে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অন্য এজেন্সির মামলাকে অন্য কোনও আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে?’ বিচারকের চোখা চোখা প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়ে আদালতের কাছে সময় চান ইডির আইনজীবী। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি বিচারকের কাছে উপযুক্ত তথ্য নিয়ে আসার জন্য আরও কিছুটা সময় চেয়ে নেন। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২ সেপ্টেম্বর।