একুশের নির্বাচনের পর থেকে বঙ্গ–বিজেপির নেতা–কর্মীদের আর ঐক্যবদ্ধ করে রাখা যাচ্ছে না। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। না হলে দল ছেড়ে দিচ্ছেন। আবার একটা বড় অংশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। আর যাঁরা এখনও আছেন তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের সব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। ফলে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে প্রত্যেকটি জেলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সমস্যাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে বঙ্গ–বিজেপির নেতৃত্বকে। তাই বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের সাংগঠনিক বৈঠকে একই বার্তা দেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, এবং কোর কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী। একজোট হয়ে কাজ করতে না পারলে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয় বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
ঠিক কী বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কড়া দাওয়াই দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। এদিন সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে কোনও দিনও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সাংসদ–বিধায়ক কেউই চিরস্থায়ী নন। সাংগঠনিক নেতারা অনেকেই সক্রিয় নন এখনও। পদে থাকলে কাজ করতে হবে। ঘরে বসে থাকা যাবে না। যাঁরা পারবেন না, তাঁরা জেলা সভাপতিকে জানিয়ে দেবেন। মণ্ডল সভাপতিরা কেমন কাজ করছেন সেই হিসেব রাখা হচ্ছে। পদ আঁকড়ে ধরে শুধু ঘুরে বেড়ালে চলবে না। সংগঠনে নজর দিতে হবে। কে টিকিট পেলেন আর কে পেলেন না, এই নিয়ে ঝামেলা করলে হবে না। যাঁরা বিজেপি ছেড়ে যাবেন না তাঁদেরই প্রার্থী করুন। বুথ কর্মীদের নাম পাঠাতে বলুন। সেখান থেকে প্রার্থী বাছাই করুন।’
ঠিক কী বলেছেন মিঠুন? কোন্দল কাঁটা নিয়ে কড়া বার্তা দেন মিঠুনও। সূত্রের খবর, শুক্রবার সাংগঠনিক বৈঠকে মিঠুন বলেন, ‘একে অপরের দিকে আঙুল তোলা বন্ধ করুন। অন্যের ঘরের দিকে না তাকিয়ে আগে নিজেদের ঘর সামলান। দলে শৃঙ্খলার অভাব দেখা যাচ্ছে। কুৎসা না করে নিজেদের নেতাকে সম্মান করুন। নেতাকে সম্মান না করতে পারলে দল ছেড়ে দিন।’ এমন কড়া বার্তা দেওয়া হলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আদৌ নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই।
সংবাদমাধ্যমে কী বলেছেন সুকান্ত? সাংগঠনিক বৈঠক শেষের পর সংবাদমাধ্যমে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই। সবাইকে এক হয়েই চলতে হয়। যে কোনও দলেই মনোমালিন্য হয়েই থাকে। তা থেকে বেরিয়ে আসাই সব রাজনৈতিক দলের কাছে চ্যালেঞ্জ। আমাদের দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। আমাদের দল নেতা ভিত্তিক দল নয়, নীতিভিত্তিক দল।’